মুন্সীগঞ্জ আদালতে দিন দিন টাউট বাটপার দালাল বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন বিচার প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ না করে টাকা নিয়ে কাজ না করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এসব দালাল টাউট বাটপারদের প্রতিহত করার জন্য মুন্সীগঞ্জ আইনজীবী সমিতি উচ্ছেদ অভিযানের উদ্যোগ নেওয়ায় আজ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে সেই উচ্ছেদ অভিযান। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আইনজীবী সমিতির হল রুম সহ জজ কোর্ট এবং চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের প্রাঙ্গণে ঘুরে ঘুরে এসব অভিযান পরিচালনা করেন আইনজীবীরা।আইনজীবী সমিতির অফিস সূত্রে জানা গেছে, যে আইনজীবীরা বার কাউন্সিলে ইনটিমেশন জমা দিয়েছেন শুধু তারাই মুন্সীগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির কর্তৃক প্রদত্ত পরিচয় পত্র ও লাল টাই পরিহিত অবস্থায় সিনিয়র আইনজীবীদের সাথে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করতে পারবেন এবং অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে গত ৯ আগস্ট জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোট প্রাঙ্গণে দুর্নীতি প্রতিরোধকল্পে টাউট বাটপার দালাল উচ্ছেদের জন্য উপ-কমিটি গঠন করা হয়। যার প্রেক্ষিতে গেলো ৩ সেপ্টেম্বর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরিষদ কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাতে দালাল টাউট বাটপারদের উচ্ছেদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।এছাড়াও কোট প্রাঙ্গণ দুর্নীতিমুক্ত রাখার জন্য বিচার প্রার্থীসহ যেকোনো ব্যক্তি টাউট বাটপার দালাল কর্তৃক হয়রানি কিংবা প্রতারিত হলে আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাধারণ সম্পাদক কিংবা আইনজীবী সমিতির নির্ধারিত অভিযোগ বাক্্ের নির্দিষ্ট তথ্য নাম ঠিকানা সহ অভিযোগ দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে।এছাড়াও আইনজীবী সহকারীদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন কিন্তু তাদের লাইসেন্স কিংবা পরিচয়পত্র নেই। তাদেরকে পরিচয় শনাক্ত করার জন্য সাত দিনের জন্য সময় দিয়েছেন। আইনজীবী সমিতির এমন অভিযান কে সাধারণ আইনজীবীরা সমর্থন করে বলেন, এমন অনেক টাউট বাটপার দালাল আদালতে ঘোরাফেরা করছেন। যারা নিজেকে আইনজীবী এবং আইনজীবী সহকারী পরিচয় দিয়ে বিচার প্রাথীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ না করে তাদেরকে হয়রানি করেন। তাদের উচ্ছেদ করার জন্য আইনজীবী সমিতির এমন অভিযানকে সাধুবাদ জানান।অভিযান পরিচালনা করেন আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জাকারিয়া মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাসুদ আলম। অভিযানে উপস্থিত থেকে সহযোগিতা করেন, সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসিমা আক্তার, অ্যাডভোকেট আলমগীর কবির, অ্যাডভোকেট রোজিনা ইয়াসমিন, অ্যাডভোকেট মো. আমানুল্লাহ প্রধান শাহীন, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন ঢালী, অ্যাডভোকেট আকলিমা আক্তার সুপ্তি, অ্যাডভোকেট অনন্যা ইসলাম, অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হোসেন রোমেল, আইনজীবী সহকারী সমিতির সভাপতি শেখ হাবিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের মাহমুদ প্রমূখ।এ ব্যাপারে আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. জাকারিয়া মোল্লা জানান, টাউট বাটপার দালালদের উচ্ছেদ করার জন্য আমাদের এই অভিযান শুরু করেছি। আদালত একটি ন্যায় বিচারের জায়গা, এখানে কেউ অনৈতিক ভাবে কাজ করে পরিবেশ নষ্ট করুক এটা আমরা আইনজীবীরা কখনোই মেনে নেবো না, টাউট বাটপারদের উচ্ছেদ করার জন্য আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো বলেন, আইনজীবী সহকারীরা যারা তাদের সমিতির তালিকাভুক্ত হননি তাদেরকে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে।আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাভোকেট রোজিনা ইয়াসমিন জানান, টাউট বাটপারদের উচ্ছেদ করার জন্য আইনজীবী সমিতি অভিযানে নেমেছে। নিয়মিত অভিযান চালানো হবে।মুন্সীগঞ্জ আদালতের কোট পুলিশের পরিদর্শক মো. জামাল উদ্দিন জানান, টাউট উচ্ছেদ অভিযানের জন্য আইনজীবীরা ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে, আদালত প্রাঙ্গণে যে কেউ অনৈতিকভাবে কাজ করলে এবং কোন টাউট বাটপার দালাল শনাক্ত হলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।