‘খালেদা জিয়াকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে বিদেশ না পাঠালে পরিণতি শুভ হবে না’

প্রকাশিতঃ সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩ | ৪:৫৬ অপরাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে বিদেশে না পাঠালে তার কিছু হলে পরিণতি শুভ হবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার সকালে তার আশু আরোগ্য কামনায় দোয়া মাহফিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এই হুশিয়ারি দেন। এর আগে খালেদা জিয়াকে বিদেশ চিকিৎসার অনুমতি দিতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটার দিয়েছিল বিএনপি। আজ মির্জা আব্বাস বলেন, আমি আবারো অনুরোধ জানাব, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টা সময় চলে গেছে। আর ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে যেন দেশনেত্রীকে বিদেশে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্য। ‘একটা কথা আমি আবারো বলছি, এই অবস্থায় দেশনেত্রীর যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আপনাদের কারো অস্তিত্ব বাংলাদেশে আমরা রাখব না। আমি দুঃখিত আমি বোধহয় একটু আবেগপ্রবণ হয়ে গেছি।’ গত ৯ আগস্ট থেকে খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা বলেছেন, তার অবস্থা সংকটজনক। লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য তাকে দ্রুত বিদেশে পাঠানো জরুরি। মির্জা আব্বাস অভিযোগ করে বলেন, আমার আসলে বোকার স্বর্গে বসবাস করছি। আমরা বুঝতে পারিনি যেদিন নেত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেদিন থেকেই তাকে হত্যার চক্রান্ত করা হয়েছে। এই গ্রেফতার ছিল তাকে হত্যা করার জন্য আমরা বুঝতে পারিনি। আমরা বুঝেছি তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অসুস্থ হওয়ার পরে আমরা বলা শুরু করেছি তিনি অসুস্থ হয়েছেন। ‘আসলে উনাকে গ্রেফতার করে অসুস্থ করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হবে এটাই ছিলো তাদের প্ল্যান। সেই প্ল্যান এখন কার্যকর করছে। আর না হলে কীভাবে অমানুষের মতো, অমানবিকতার মতো একটা কথা বলেন যে, খালেদা জিয়াকে বাইরে পাঠানোর কোনো সুযোগ নাই, আইনের জটিলতা আছে’-যোগ করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা। জীবন বাঁচাতে আইনের প্রয়োজন হয় না জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, একটা মানুষের জীবন বাঁচাতে পৃথিবীর কোনো আইন-টাইন কাজে লাগে না। যখন জীবন বাঁচানোর প্রয়োজন হয় তখন তার জন্য যে চিকিৎসা দরকার যেখানে চিকিৎসা দরকার যেটা করা দরকার এটা হলো মানবিক এটা আইন। আন্তর্জাতিক জেনেভা কনভেনশনের একটা আইন আছে সেই আইনে উনি চিকিৎসা পেতে পারেন। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। ‘আমরা আশা করছি সরকার এই সুযোগটা নেবেন যে, দেশনেত্রীকে বিদেশে তারা পাঠিয়েছেন, এই সুযোগটা তারা নিতে পারেন।’ কারাবন্দি নেতাদের বিদেশে পাঠানোর অতীত উদাহরণ তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘গতকাল আমাদের মহাসচিব বলেছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উনাকে বিদেশে পাঠাতে হবে। আজকে দেখলাম উনারা (সরকার) বলছেন, আইনের জটিলতা আছে। আমি আজকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেবের সময়ে আ স ম আবদুর রব জার্মান পাঠানো হয়েছিল। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সময়ে আজকের যে বেঈমান একটা আছেন রাশেদ খান মেনন…তাকে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন, তার লিভার টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল, তাকে সুস্থ করেছিলেন। আজকে সে আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলে। ‘ তিনি বলেন, হাজি সেলিম সে ব্যাংকক গেলো, চিকিৎসা করে ফেরত আসলো সে বাইরে আছে, এখন সহিসালামতে আছে। ম খা আলমগীর (মহিউদ্দিন খান আলমগীর) একই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বাইরে ঘুরাফেরা করছেন, মায়া (মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া) একই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বাইরে ঘুরাফেরা করছে। অথচ আমার নেত্রী কিছুই অপরাধ করেননি, তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। নয়াপল্টনের নিচ তলায় ৯০‘র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যে ও ছাত্র দলের সাবেক নেতাদের উদ্যোগে অসুস্থ খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় এই দোয়া হয়। এতে সাবেক ছাত্র নেতাদের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, খায়রুল কবির খোকন, জহির উদ্দিন স্বপন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, শিরিন সুলতানা, আসাদুর রহমান খান, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।