বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে সরকারের কিছুই করার নেই। এমতাবস্থায় বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানতে প্রশ্ন করা হয় দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারকে। স্থানীয় সময় সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ প্রসঙ্গ উঠে আসে। ‘বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল তাদের চেয়ারপারসনকে মুক্তি দিতে এবং তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে। কারণ, তার স্বাস্থ্যগত অবস্থা গুরুতর। তিনি বন্দি, হাসপাতালে ভর্তি। তার বয়স ৭৮ বছর। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের অবস্থান জানতে চাওয়া হয়। জবাবে মিলার বলেন, এ বিষয়ে তার কোনো মন্তব্য নেই। মিলারের কাছে প্রশ্ন করা হয়, গত সপ্তাহে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন যে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্তে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাইরে থেকে নির্বাচন বানচালের কোনো পদক্ষেপের ক্ষেত্রে যারা এ ধরনের উদ্যোগ নেবে, তাদের ওপর বাংলাদেশের জনগণ নিষেধাজ্ঞা দেবে। পরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্র আর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেবে না বলে আশ্বাস দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে মিলারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এ কথা কি সত্য? এ বিষয়ে মিলারের প্রতিক্রিয়া কী? জবাবে মিলার বলেন, আমি বলব, যেমনটা আমরা আগেও বলেছি, যেমনটা গত মে মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এই নতুন নীতি ঘোষণা করেছিলেন, তখনো আমরা বলেছিলাম, এর উদ্দেশ্য বাংলাদেশে নির্বাচনে কারও পক্ষ নেওয়া নয়। এর উদ্দেশ্য বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করা বা সমর্থন করা। আমি বলব, গত শুক্রবার যখন আমরা এই নতুন ভিসা বিধিনিষেধ কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছিলাম, তখন আমরা উল্লেখ করেছি, এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দল ও রাজনৈতিক বিরোধীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ব্রিফিংয়ে আরেকজন মিলারের কাছে প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ২৪ সেপ্টেম্বর নতুন ভিসানীতিতে গণমাধ্যম ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত হবেন বলে উল্লেখ করেন, যা ব্যাপক উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা গণমাধ্যমে কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন সাবেক সম্পাদক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার পরিপন্থী। প্রশ্নকারী মিলারের কাছে জানতে চান, এই নিষেধাজ্ঞা যদি গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে তা মানবাধিকার, বাক্স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানের গুরুত্বকে ক্ষুণ্ন করবে বলে তিনি মনে করেন কি না। জবাবে মিলার বলেন, ভিসা-সংক্রান্ত রেকর্ড গোপনীয় হওয়ায় সুনির্দিষ্ট সদস্য বা ব্যক্তি—কার জন্য এই নীতি প্রযোজ্য হবে, তার ঘোষণা তারা দেননি। তবে তারা এ বিষয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে এই নীতি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন দল ও রাজনৈতিক বিরোধীদের জন্য প্রযোজ্য হবে।