ডেঙ্গুতে সহস্রাধিক মৃত্যু শক সিনড্রোমের রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে

প্রকাশিতঃ অক্টোবর ৩, ২০২৩ | ৬:২৩ অপরাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

বিশ্বে ডেঙ্গু সংক্রমণের শীর্ষে থাকা ব্রাজিলকেও ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। এ রোগে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকায় মানুষ দেশের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। বস্তুত এবারের ডেঙ্গু পরিস্থিতি অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। গত ৯ মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ১ হাজার ছাড়িয়েছে। এ বছর দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিশ্বের কোনো দেশেই অতীতে ডেঙ্গুতে এত মৃত্যু হয়নি, যা এবার হয়েছে বাংলাদেশে। বিষয়টি উদ্বেগজনক। ডেঙ্গুতে শীর্ষস্থান লাভ কোনো ইতিবাচক তথ্য নয়। আগামীতে যেন এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, সেজন্য এখন থেকেই এডিস মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সবাইকেই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। দেশের আবহাওয়া, তাপমাত্রা ও আর্দ্রতায় ডেঙ্গুর ধরন ও উপসর্গ বদলেছে। জটিল ডেঙ্গু রোগীদের মাল্টিপল অর্গান ফেইলিউর হচ্ছে। ফলে ৯০ শতাংশ রোগীর প্রাণ যাচ্ছে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে। দিন দিন এ পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ডেঙ্গুর বৈশিষ্ট্য বদলের কারণে ডায়াগনসিসের তাৎক্ষণিক ফলাফলে বিভ্রান্ত হচ্ছেন রোগী ও তার স্বজন-ডেঙ্গু টেস্টে নেগেটিভ ফল, উপসর্গও ডেঙ্গুর মতো নয়; কিন্তু হঠাৎ রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রে রোগী কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ শরীরে রক্তের জলীয় অংশ কমে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এতে রোগী শকে চলে যাচ্ছেন। কেন এমনটি হচ্ছে, তা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা হওয়া দরকার। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, ডেঙ্গুতে শক সিনড্রোমে চলে যাওয়া রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো দরকার। এ বিষয়ে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। বস্তুত হাসপাতালে যেতে দেরি হওয়ার কারণেই অনেক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, অব্যবস্থাপনার কারণেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী বেশি মারা যাচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ডেঙ্গু এনএস-১ পরীক্ষার ফল নেগেটিভ হওয়ার কারণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে সংক্রমিত হন, অনেক ক্ষেত্রেই তাদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। আর সেরোটাইপ-২ সংক্রমণের ক্ষেত্রেও এনএস-১ পরীক্ষার ফল নেগেটিভ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কাজেই ঝুঁকি এড়াতে ডেঙ্গুর সহায়ক পরীক্ষা হিসাবে সিবিসি, ডেঙ্গু এন্টিবডি, ডেঙ্গু পিসিআর ও অন্যান্য পরীক্ষাও করানো উচিত। যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বাড়ছে; সেহেতু পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে।