গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলার আসামি প্রতিষ্ঠানটির তিন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার সংস্থার উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বে একটি দল তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। শুরুতে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এক এক করে তারা হাজির হয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। পরে তাদের মুখোমুখি করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তারা মৌখিক ও লিখিত তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন। দুদক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে তলবি নোটিশে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার দুদকে যাচ্ছেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা, নোবলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার আইনজীবী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ইউনূসকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আগেই বৃহস্পতিবার দিন ঠিক করে তাকে তলব করেছে দুদক। জানা যায়, বুধবার বেলা ১১টার দিকে সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে হাজির হন গ্রামীণ টেলিকমের পরিচালক নাজনীন সুলতানা, পরভীন মাহমুদ, নুরজাহান বেগম ও হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী। দুদক কর্মকর্তারা শুরুতে তাদের এক এক করে একটি কক্ষে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরপর তিনজনকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রায় ৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেলা ২টার দিকে তারা দুদক কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান। এদিকে ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, অন্য মামলায় সাজা দিতে পারবে না বলে তড়িঘড়ি করে ইউনূসের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দেওয়া হয়। জানা যায়, চলতি বছরের ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ড. ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদক কর্মকর্তারা বলেছেন, গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ সম্পর্কিত অভিযোগ দুদকের কাছে আসে। আরও জানা যায়, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এসএম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফীকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। আসামি তালিকায় আরও আছেন অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের সবাইকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকে তলব করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।