ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ড অবৈধভাবে দখলের পরিণাম ভয়াবহ হতে পারে আগেই ইসরাইল সরকারকে জানিয়েছিলেন একজন ইসরাইলি আইনপ্রণেতা। কিন্তু তারপরও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার দখলদারিত্বের নীতিতে পরিবর্তন আনেননি বলে জানিয়েছেন তিনি। রোববার (৮ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন ইসরাইলের পার্লামেন্ট নেসেটের বামপন্থী জোট হাদাশের সদস্য ওফার ক্যাসিফ। শনিবার স্থানীয় সময় ভোরের দিকে ইসরাইলে হাজার হাজার রকেট নিক্ষেপ শুরু করে হামাস। গাজাভিত্তিক সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর যোদ্ধারা ইসরাইলি বিভিন্ন শহর ও অবৈধ বসতিতে অনুপ্রবেশ করে বহুমুখী হামলা চালায়। এই হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৭০০ ইসরাইলি নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর ৪৪ জন সদস্য রয়েছেন। হামাসের হামলায় ইসরাইলিদের অসংখ্য লাশ রাস্তায় পড়ে আছে। আর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বোমা হামলায় কমপক্ষে ৩৭০ ফিলিস্তিনি নিহত ও এক হাজার ৭০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। বামপন্থী জোট হাদাশের সদস্য ওফার ক্যাসিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ইসরাইলি সরকার যদি ফিলিস্তিনিদের প্রতি নীতিতে পরিবর্তন না আনে, তাহলে পরিস্থিতির বিস্ফোরণ ঘটবে বলে তিনি সতর্ক করে দিয়েছিলেন। ইসরাইলের ১২০ সদস্যের পার্লামেন্ট নেসেটে হাদাশের চারটি আসন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর যে কোনো ধরনের হামলার নিন্দা ও বিরোধিতা করি। ইসরাইলি সরকারের বিপরীতে এর অর্থ হলো আমরা ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর যে কোনো হামলারও বিরোধিতা করি। আমাদের অবশ্যই সেই ভয়ানক ঘটনা (আক্রমণ) এবং চলমান দখলদারিত্বের বিষয়গুলো নিয়ে সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে।’ ক্যাসিফ আরও বলেন, ‘ইসরাইল সরকার ফ্যাসিবাদী সরকার। ফিলিস্তিনিদের জাতিগতভাবে নির্মূলকে সমর্থন দিয়ে উৎসাহ এবং নেতৃত্ব দেয়। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন চলছে। ফিলিস্তিনিদের রক্তে এটা স্পষ্টভাবে দেয়ালে লেখা আছে। দুর্ভাগ্যবশত এখন ইসরাইলিদেরও একই দশা হতে চলেছে। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর মতে, ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি গাজার সীমান্ত অঞ্চল ছেড়ে হামাস-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের আরও ভেতরে গিয়ে জাতিসংঘের স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। ক্যাসিফ বলেন, ‘নেতানিয়াহু ইসরাইলের নাগরিকদের মঙ্গল চায় না, অধিকৃত অঞ্চলের ফিলিস্তিনিরা দূরের কথা। তিনি শুধু ক্ষমতায় থাকতে আগ্রহী। মামলা থেকে রেহাই পেতে শুধু জেলের বাইরে থাকতে চায়। এটিই একমাত্র প্রেরণা ও উদ্দেশ্য।’ ফিলিস্তিনে নিযুক্ত জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ বলছে, ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি গাজার সীমান্ত অঞ্চল ছেড়ে জাতিসংঘের স্কুলগুলোতে আশ্রয় নেওয়ার জন্য হামাস-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের আরও ভেতরে চলে গেছে।