আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অন্ধকারে ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা

প্রকাশিতঃ অক্টোবর ৯, ২০২৩ | ৮:৩৭ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলেও এখনো অন্ধকারে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো। জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। তবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা না হওয়ায় শরিক দলের নেতারা কে কোথা থেকে নির্বাচন করবেন, তা অনিশ্চিত। এ কারণে তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতিও থমকে আছে। সম্প্রতি গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা অতীতের মতো আগামীতেও ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে শরিক দলের নেতাদের আশ্বস্ত করেন। এ সময় তিনি যার যার মতো করে নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিতে বলেন শরিক দলের নেতাদের। কিন্তু এই প্রস্তুতিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আসন সমঝোতার বিষয়টি-এমনটাই দাবি করছেন ১৪ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচন করে বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, জাতীয় পার্টি-জেপি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিতে চায় তারা। এর বাইরে ১৪ দলীয় জোটের আরও তিন শরিক গণতন্ত্রী পার্টি, সাম্যবাদী দল (এমএল) এবং ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছে আসন দাবি করবে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে যে, তারা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছে আরও বেশি আসন চাইবে। বর্তমান সংসদে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির তিনজন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের তিনজন, জাতীয় পার্টি-জেপির একজন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের দুজন এবং বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের একজন সদস্য আছেন। শরিক দলের নেতারা বলছেন, বিরোধী দলকে রাজপথে মোকাবিলায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নিজেদের মতো করে পুরোদমে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। আসন সমঝোতার বিষয়ে কোনো সুরাহা না হওয়ায় এক্ষেত্রে পিছিয়ে যাচ্ছেন শরিক দলগুলোর প্রার্থীরা। বিরোধী দলের ধারাবাহিক কর্মসূচির বিপরীতে মাঝখানে ১৪ দলীয় জোট বেশ সরব এবং সক্রিয় হয়ে উঠলেও গত দুই মাসে তাদের আর কোনো তৎপরতা নেই। রাজপথেও নেই, ঘরোয়াভাবেও নেই-ফলে আগামী নির্বাচন এবং এই নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশগ্রহণের বিষয়ে পুরোপুরি অন্ধকারে তারা। জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম প্রধান শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি রোববার বলেন, আমরা আশা করছি চলতি মাসেই আসন সমঝোতার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে পারব। তিনি আরও বলেন, আসন সমঝোতার বিষয়টি চূড়ান্ত হলে শরিক দলগুলো যার যার মতো করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারবে। অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি মিলবে, পাশাপাশি ভোটের মাঠে ভালো ফলাফল করাটাও সহজ হবে। সাম্যবাদী দলের (এমএল) সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা এবার আওয়ামী লীগের কাছে একটি আসন চাইব। এই আসনটি আমার জন্য। আমি নিজে চট্টগ্রাম-১ আসন থেকে সংসদ নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। নির্বাচনি এলাকায় নিয়মিত সভা-সমাবেশ ও জনসংযোগ করছি। আশা করছি আওয়ামী লীগ এই আসনে আমাকে ছাড় দেবে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রবীণ রাজনীতিবিদ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু এমপি বলেন, ১৪ দল দলগতভাবে আমরা নির্বাচনে অংশ নেব। এটি ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন। আসন সমঝোতার বিষয়টিও তিনি দেখবেন। হাতে আরও সময় আছে, আশা করছি এ নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।