সাধারণ করদাতাদের মাঝে আগ্রহ থাকলেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবারও আয়কর মেলার আয়োজন করছে না। এর পরিবর্তে সেবা মাস (১-৩০ নভেম্বর) উদযাপন করা হবে। সেবা মাসে মেলার আবহে করদাতারা যেন রিটার্ন জমা দিতে পারেন, সে বিষয়ে এনবিআর ইতোমধ্যে কর অঞ্চলগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে। করদাতাদের সুবিধার্থে কর অঞ্চলগুলোয় রিটার্ন গ্রহণ বুথ, ফর্ম বিতরণ, হেল্প ডেস্কসহ সব ধরনের সেবা দেওয়া হবে। জাতীয় আয়কর দিবস উদ্যাপনে গঠিত কমিটির সভার কার্যবিবরণী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। দেশে কর সংস্কৃতি গড়ে তুলতে ২০১০ সালে সর্বপ্রথম ঢাকা ও চট্টগ্রামে আয়কর মেলার আয়োজন করে এনবিআর। শুরুতে সাড়া না পাওয়া গেলেও পরবর্তী সময়ে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের কাছে এ মেলা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। প্রতিবছর করদাতাদের বড় অংশ মেলায় রিটার্ন দিতেন। ঢাকা ও চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত মেলা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে মেলা আয়োজন বন্ধ রাখে এনবিআর। এরপর থেকে মেলার আয়োজন বন্ধ রাখা হয়েছে। এ নিয়ে টানা তিন বছর মেলা হচ্ছে না। সর্বশেষ ২০১৯ সালের সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলায় ৬ লাখ ৫৫ হাজার করদাতা রিটার্ন জমা দেন। আয়কর মেলা নিয়ে সাধারণ করদাতাদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের কারণ, মেলায় হয়রানি ছাড়াই রিটার্ন জমা দেওয়া যেত। তাছাড়া একই জায়গায়ই রিটার্ন ফর্ম পূরণ থেকে শুরু করে কর পরিশোধের টাকাও জমা দেওয়া যেত। কর কর্মকর্তারাও মেলায় কর দিতে আসা করদাতাদের বেশ সহযোগিতা করতেন। কিন্তু কর সার্কেলে রিটার্ন জমা দিতে করদাতাদের বেগ পোহাতে হয়। কর সার্কেলের নিচে স্থান সংকুলানের অভাব, করের টাকা জমা দিতে ব্যাংকে ছোটাছুটি এবং রিটার্ন জমার প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পেতে পরবর্তী সময়ে সার্কেলে যেতে হয়। সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে সেবা মাস উদ্যাপনের প্রস্তুতি নিতে কর অঞ্চলগুলো জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কর অঞ্চলগুলো নিজ নিজ অফিসের নিচে প্যান্ডেল বা অফিসে নির্ধারিত স্থানে বুথ স্থাপন করে আলাদাভাবে রিটার্ন জমার ব্যবস্থা করবে। সেই বুথে রিটার্ন জমা নেওয়া হবে। কর পরিদর্শকসহ সব অফিসারকে মেলার মতো করদাতাদের সেবা দিতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এনবিআর থেকে। এক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি বা হয়রানির প্রমাণ পাওয়া গেলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। অবশ্য আয়কর দিবস উদ্যাপন এবং সর্বোচ্চ করদাতাদের সম্মাননা দেবে এনবিআর। এ লক্ষ্যে একাধিক কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আয়কর দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় দৈনিকে ক্রোড়পত্র, র্যালি, ব্যানার-ফেস্টুন টাঙানো, সচেতনতামূলক টকশোর আয়োজন করা হবে। এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণিতে ১৪১ জন সর্বোচ্চ করদাতাকে সম্মাননা দেওয়া হবে।