মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাত নিয়ে সোমবার কূটনৈতিক উদ্যোগে যোগ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি ফোনালাপ করেছেন সংঘাতে লিপ্ত ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের সঙ্গে। এছাড়া আঞ্চলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ইরান, মিসর ও সিরিয়ার নেতার সঙ্গে। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য এই প্রচেষ্টা তার। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ শক্তি ইরান এবং গাজার শাসক গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক রয়েছে। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ও ইসরায়েলের সঙ্গেও সম্পর্ক রয়েছে মস্কোর। রাশিয়া বলে আসছে, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমারা ১৯৬৭ সালের সীমান্তের ভিত্তিতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি উপেক্ষা করছে। ক্রেমলিন জানিয়েছে, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন পুতিন। তিনি মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেছেন। পুতিনকে রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ বলেছেন, পরিস্থিতির তীব্রতা বাড়ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ বাছবিচারহীন এবং ইসরায়েল গাজায় স্থল অভিযান শুরুর ঝুঁকি রয়েছে। রাশিয়ার গোয়েন্দা প্রধান ও সামরিক নেতাদের উপস্থিতিতে এক বৈঠকে পুতিনকে রিয়াবকভ বলেছেন, এই সংঘাত নিয়ন্ত্রণে বাইরে চলে যাওয়ার বড় ধরনের হুমকি রয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ব্যর্থনীতির কারণে এই সংকটের জন্য মূলত দায়ী যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মস্কোর প্রস্তাব আটকে দিচ্ছে ওয়াশিংটন। পুতিন বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের এই চলমান সহিংসতা দেখিয়ে দিচ্ছে অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি কতটা ব্যর্থ। চলতি সপ্তাহে চীন সফর করবেন পুতিন। এ সময় চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বৃহত্তম কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি দেশ নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করবে। চীন ও রাশিয়া উভয়েই নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। দুই দেশ বলে আসছে, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের মূলে রয়েছে ফিলিস্তিনিদের জন্য ন্যায়বিচারের অভাব। ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকা মিলিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র চায়। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে এসব ভূখণ্ড দখল করেছে ইসরায়েল। ক্রেমলিনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেছেন, আমরা মনে করি এই পরিস্থিতিতে প্রধানত যা করা উচিত তা হলো অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং রাজনৈতিক সমাধানের প্রক্রিয়ার উদ্যোগ গ্রহণ। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বেইজিংয়ে ইসরায়েল ও হামাসের সংঘাত নিয়ে চীনা পররাষ্ট্র ওয়াং ইয়ির সঙ্গে আলোচনা করেছেন। ল্যাভরভ বলেছেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে অবশ্যই পদক্ষেপ নিতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ শক্তিদের সক্রিয় ভূমিকা রাখা উচিত।