ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার দুপুরের পর আবহাওয়া অফিস থেকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করার পর এ নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। ঘূর্নিঝড় মোকাবিলায় ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় ৭৮৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় এলাকা এবং পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের সরে যেতে মাইকিং শুরু করে জেলা প্রশাসন। সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকেও ২৯০টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে চসিকের আওতাধীন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ছাড়তে ৫টি গাড়িতে মাইকিং শুরু করে রেডক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবক দল। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে। দুর্যোগকালীন যেকোনো প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন নাম্বার ০২৩৩৩৩৫৭৫৪৫-এ যোগাযোগ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জরুরি প্রয়োজনে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০২৩৩৩৩৫৪৮৪৩ নম্বরেও যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ মোকাবিলায় চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলা এবং নগরী মিলে ৭৮৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী রাত ৮টার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে আমরা কাজ করছি। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মানুষ অবস্থান করতে যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায়ও সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে পূর্বাভাস পাওয়ার পর থেকে আমরা মাইকিং শুরু করেছি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সেভাবেই কাজ করছে। এদিকে দুপুরের পর থেকে নগরীর পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে কাজ শুরু করে জেলা প্রশাসন। তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে মাইকিং করা হয়। সন্ধ্যার পর আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার কথা রয়েছে। অপরদিকে ঘূর্ণিঝড় হামুন মোকাবেলায় চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে ২৯০টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কর্মস্থলে অবস্থান করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।