চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ক্লুলেস হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামিকে গ্রেফতার করলো পিবিআই

প্রকাশিতঃ নভেম্বর ৮, ২০২৩ | ৮:৫৩ অপরাহ্ন
আলমগীর বাবু, চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি, চাঁদপুর

চাঁদপুরে মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ক্লুলেস হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামিকে গ্রেফতার করলো পিবিআই চাঁদপুরের একটি চৌকস দল। এ্যাডিশনাল আইজিপি, পিবিআই বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই পুলিশ সুপার (চাঁদপুর ) মোঃ মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে ও সহযোগিতায় এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার পূর্বক পিবিআই উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) আমিরুল ইসলাম মীর একটি বিশেষ টিম নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার ৫নং সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল মোতালেবের ছোট ছেলে (অটোচালক) আরমান (১৫)\'র ক্লুলেস হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামিকে গ্রেফতার করে। বুধবার বেলা ১২ পিবিআই চাঁদপুর কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পিবিআই পুলিশ সুপার। এ ব্যপারে ৭ অক্টোবর\'২৩ খ্রিঃ, হাজীহঞ্জ থানা মামলা হয়েছে, মামলা নং-০৪, ধারা- ৩০২/২০১/৩৭৯/৩৪ পেনাল কোড। আরমান হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামী যথাক্রমে ; হাজীগঞ্জ সদরের ৫নং ইউনিয়নস্থ ২নং ওয়ার্ড বাড্ডা গ্রামের মজুমদার বাড়ির মৃত আবুল কাশেম মজুমদারের ছেলে শুক্কুর আলম মজুমদার (৩০), অন্যজন একই উপজেলার ১১নং পশ্চিম হাটিলা ইউনিয়নস্থ ৮নং ওয়ার্ড কাঠালী গ্রামের পূর্ব দিঘীর পাড়ের মোঃ শাহ জালাল বেপারীর ছেলে মোঃ সবুজ বেপারী (২৮)। তারা দুজন সম্পর্কে সমনদি বোন জামাই। প্রেসব্রিফিংয়ে পিবিআই পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের জানান, গত ৬ অক্টোবর\'২৩খ্রিঃ বিকেল অনুমান ৪ ঘটিকায় হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোবাইল ফোনে জানায় যে, হাজীগঞ্জ থানাধীন দক্ষিণ দোয়ালিয়া সাকিনস্থ হাজীগঞ্জ টু তারাপাল্লা রোডে পূর্ব পাশে জনৈক আবু সুফিয়ানের ক্রয়কৃত জমির নতুন ভরাটকৃত বালুর স্তুপে একটি লাশ লুকায়িত আছে এবং লাশের মাথাটি বালির উপরে উঠানো আছে। প্রাপ্তি সংবাদের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক পিবিআই ক্রাইমসিন টিম ঘটনাস্থলে হাজির হলে সেখানে উপস্থিত ভিকটিমের বাবা আবদুল মোতালেব (৭৬), পিতা- মৃত আব্দুল হাশিম, সাং- মকিমাবাদ, পাতলা বাড়ী, ৪নং পৌর ওয়ার্ড, থানা- হাজীগঞ্জ, জেলা- চাঁদপুর ভিকটিমের পড়নের কাপড়-চোপড় ও পায়ে পরিহিত জুতা দেখে উদ্ধারকৃত ভিকটিম তার ছেলে বলে সনাক্ত করেন। ভিকটিমের নাম- আরমান (১৫), পেশায় মিশুক গাড়ী চালক। গত ৩০ অক্টোবর\'২৩ খ্রিঃ আরমান নিখোজ হয় মর্মে তাঁর বাবা হাজীগঞ্জ থানায় নিখোজ ডাইরি করেন। ভিকটিমকে গত ৩০ অক্টোবর\'২৩ খ্রিঃ হতে ৬ নভেম্বর\'২৩ খ্রিঃ এর মধ্যে যেকোন সময় হত্যা করে লাশ বালি স্তুপে পুতে রেখে অজ্ঞাতনামা আসামীরা তার অটোরিকশা গাড়ীটি চুরি করে নিয়ে যায় মর্মে জানা যায়। তিনি বলেন, সূত্রে বর্ণিত মামলাটি পিবিআই সিডিউল ভুক্ত হওয়ায় মামলাটি অধিগ্রহণ করতঃ উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) আমিরুল ইসলাম মীরকে তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। আসামীদের দেখানো মতে মামলার সংশ্লিষ্ট আলামত আসামীদের কর্তৃক চোরাইকৃত অটোরিকশা গাড়ীটি শাহরাস্তি থানাধীন হোসেনপুর বাজারস্থ একটি অটোরিকশার গ্যারেজ হতে এবং হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ইঁট ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী খাল হতে উদ্ধার পূর্বক উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে জব্দ করা হয় । কোন উদ্দেশ্যে এমন হত্যাকান্ড সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, মিশুকটি ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়াটাই ছিল আসামিদের মুল উদ্দেশ্য এমনকি তারা মিশুকটি ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যেখানে রেখেছে তাদের দেয়া তথ্যমতে আমরা সেখান থেকে মিশুকটি উদ্ধার করতে গিয়ে মিশুকটির রং পরিবর্তন লক্ষ করেছি মামলার বিবরণের তথ্যমতে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি কে ঘটালো আরেক প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছে শুক্কুর আলম সে আরমানকে ইট দিয়ে মাথার পিছনে পরপর দুটি আঘাত করে এবং তাকে সাহায্য করে সবুজ বেপারী। আরমানকে হত্যার পর তারা হত্যায় ব্যবহৃত ইটটি পাশের খালে ফেলে দেয়। আটকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হবে। সর্বশেষ পিবিআই কর্তৃক দেয়া তথ্যমতে আটকৃতদের আদালতে হাজির করলে আসামিরা আদালতে হত্যাকান্ডের বিষয়ে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন পিবিআই চাঁদপুর কার্যালয়।