তিন লক্ষ ছত্রিশ হাজার ভোটারের পদ্মা পাড়ের দুই উপজেলা লৌহজং ও টংগিবাড়ী নিয়ে মুন্সিগঞ্জ ২ সংসদীয় আসন। ২০০৮ এর আগে এই দুই উপজেলা দুইটি ভিন্ন সংসদীয় আসনের অংশ ছিল। লৌহজং উপজেলা মুন্সিগঞ্জ ২ ও টংগিবাড়ী উপজেলা মুন্সিগঞ্জ ৩ আসনের অংশ ছিল। ২০০৮ এর আগে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ এর জাতীয় নির্বাচনে লৌহজং উপজেলার প্রার্থীরা তৎকালীন মুন্সিগঞ্জ ২ ও টংগিবাড়ী উপজেলার প্রার্থীরা তৎকালীন মুন্সিগঞ্জ ৩ আসনে পরাজিত হতেন।জননেত্রী শেখ হাসিনার ক্যারিশমায় জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষাপট বদলে যাওয়ায় আর আসন পূনর্বিন্যাসের কারণে লৌহজং টংগিবাড়ী এক আসন হওয়ায় ২০০৮ সাল থেকে শুরু হয় নতুন ইতিহাস। ভিন্ন ভিন্ন আসনে থেকে যেখানে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে লৌহজং ও টংগিবাড়ী উপজেলার প্রার্থীরা বিপুল ভোটে পরাজিত হতেন। এক আসন হওয়ার পরে সেখানে গত তিন নির্বাচনে নৌকা জিতেছে বিপুল ভোটে। দলীয় আনুগত্যর কারণে, আঞ্চলিকতাকে প্রশ্রয় না দিয়ে, চল্লিশ হাজার ভোট বেশি হওয়ার পরেও নিজ উপজেলার স্বতন্ত্র প্রার্থীকে প্রত্যাখ্যান করে টংগিবাড়ী উপজেলার মানুষ ভোট দিয়েছেন নৌকায়। টংগিবাড়ী উপজেলার ব্যাপক জনগোষ্ঠী আশা করেন, গত তিন নির্বাচনের দলীয় আনুগত্যর পুরস্কার হিসেবে এবার জননেত্রী শেখ হাসিনা টংগিবাড়ী থেকে কাউকে মনোনয়ন দিবেন। গত তিন নির্বাচনে আঞ্চলিকতার উর্দ্ধে উঠে টংগিবাড়ীবাসী নৌকায় ভোট দিয়েছেন। টংগিবাড়ীর কেউ মনোনয়ন পেলে লৌহজংয়ের ঐতিহ্যবাহী নৌকার ভোটাররা পাশে থাকবেন বলে তারা প্রত্যাশা করেন।এই প্রত্যাশার জায়গা থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে মুন্সিগঞ্জ ২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে নেমেছেন এক ঝাক নতুন সম্ভাব্য প্রার্থী।এই নতুন প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ মানুষের কাছে সবসময় আলোচনায় আছেন টংগিবাড়ী উপজেলা পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান, শেরেবাংলা হল ছাত্র সংসদের (বুয়েট) সাবেক ভিপি, মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার কাজী ওয়াহিদ। ঐতিহ্যগতভাবেই তিনি গণমানুষের কাছের লোক।সাধারণ মানুষ মনে করেন ইঞ্জিনিয়ার কাজী ওয়াহিদ যোগ্য, মেধাবী, অভিজ্ঞ ও অভিভাবক সুলভ নেতা। সে স্থায়ীভাবে টংগিবাড়ী উপজেলার মারিয়ালয় গ্রামের পৈত্রিক বাড়িতে বসবাস করেন। তাকে সারা বছর কাছে পাওয়া যায়। তার সাথে সব সময় কথা বলা যায়। তার কাছে গিয়ে কেউ খালি মুখে বা খালি হাতে ফিরে আসেন না। তার কাছে কাউকে ধরে যেতে হয় না। যে কোন মানুষ ফোন করলে তিনি ফোন ধরেন অথবা পরে ফোন করেন। তার দরজা সকলের জন্য সকল সময়ে খোলা।পচিশ বছর ধরে শীতার্ত অসহায় মানুষদের বাড়ীতে দাওয়াত করে এনে নিজ হাতে বিয়ে বাড়ীর মতো আপ্যায়ন করে হাজার হাজার লেপ বিতরণ করেছেন।নিজ খরচে গত দশ বছরে চার হাজার চক্ষু রোগীর ছানি অপারেশন করিয়ে দিয়েছেন। করোনার সময় নিজে দুইবার আক্রান্ত হওয়া স্বত্তেও একটানা দুই বছর গ্রামে থেকে মানুষকে সার্বক্ষণিক সহায়তা দিয়েছেন।এখনো সার্বক্ষণিকভাবে টংগিবাড়ী থাকেন। এই বিষয়গুলো কাজী ওয়াহিদকে জনগণের আস্থার জায়গায় এনে দিয়েছে।যে কোন পাবলিক পরীক্ষায় তিনি অভিভাবকদের জন্য বসা ও আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন। এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ৫ পাওয়া ছাত্র ছাত্রীদের বাড়িতে যেয়ে ফুল-মিস্টি-পিঠা দিয়ে শুভেচ্ছা জানান, কক্সবাজার বেড়াতে নিয়ে যান।চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ বছর ধরে বৃত্তি দিয়ে আসছেন। নিয়মিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে ছাত্র শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ রাখেন। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে তার রয়েছে ভিন্নমাত্রার গ্রহনযোগ্যতা।টংগিবাড়ী উপজেলার প্রতিটি বাড়িতে যেয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের প্রচার ও নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে গণসংযোগ করেছেন। স্কুলে স্কুলে মা সমাবেশ, গ্রামে গ্রামে মুরুব্বিদের নিয়ে বউয়া মিটিং করে তাদের দাবি দাওয়া শুনে তা পুরণ করেন আর নৌকার পক্ষে ভোট চান। ছোট ছোট বাজারের চায়ের দোকানে সাধারণ মানুষের সাথে চা আড্ডায় রাজনৈতিক মতবিনিময় করেন। প্রতিটি মসজিদে নামাজ পড়তে যেয়ে মুসুল্লিদের সাথে কুশল বিনিময় করে তিনি ব্যাপক জনগোষ্ঠীর সাথে ব্যক্তিগত পর্যায়ের যোগাযোগ রাখেন। সব সময়ে সত্য বলা, বিনয়ী ব্যবহার আর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে চলায় তিনি আছেন সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের জায়গায়। নারী ও তরুণদের কাছে রয়েছে তার আলাদা গ্রহনযোগ্যতা।উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে তার রয়েছে ঈর্ষনীয় সফলতা। তার এগারো বছরের মেয়াদে তিনি পাচবার জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন। গত পনের বছরের সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডে তিনি সক্রিয় ছিলেন। সকল উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন। সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে ব্যক্তিগত পর্যায়ের আদর আপ্যায়ন করেন।নির্বাচন ছাড়াও বারোমাস মানুষের খোজ খবর নেন। যে কারণে দলীয় ভোটের বাইরে টংগিবাড়ী উপজেলায় তার আছে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিগত ভোট ব্যাংক। লৌহজংয়ে ঐতিহ্যগতভাবেই নৌকা এগিয়ে। আর এখানে রাজনীতি সচেতন মানুষের কাছে কাজী ওয়াহিদের রয়েছে সৃজনশীল, মেধাবী, পরিশ্রমী ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদের ইমেজ। দলীয় ভোটের সাথে ব্যক্তিগত ভোট ব্যাংক মিলে কাজী ওয়াহিদের নৌকার তরী তীরে ভিড়ার রয়েছে উজ্জ্বল সম্ভাবনা।