বিএনপি ছেড়ে কেউ ভালো কিছু করেছে সে নজির নেই: রুমিন

প্রকাশিতঃ নভেম্বর ১৩, ২০২৩ | ৯:০১ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

নির্বাচনের আগে নতুন দলে যোগ দেওয়া এবং পুরনো দল ছাড়ার নজির বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন কিছু নয়। এটি নিয়ে তৈরি হয় নানা ইস্যু। ঠিক তেমনি এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেও শুরু হয়েছে গুঞ্জন। শুধু তাই নয়, কদিন পরেই নির্বাচনে তফশিল ঘোষণা হবে। একে ঘিরে বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টান টান উত্তেজনা। বর্তমান দেশের রাজনীতির সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন টকশোতে অংশ নেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহসম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। সেখানে দলের অভ্যন্তরীণ অনেক বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন এ সাবেক সংসদ সদস্য। আরও পড়ুন: কেন বিএনপিকে ভাঙতে মেজর হাফিজকে বেছে নেওয়া হয়েছে জানালেন রনি এ সময় উপস্থাপক ব্যারিস্টার রুমিনের কাছে জানতে চান, মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তিনি নতুন দল করছেন না, দলে সংস্কার চেয়েছেন। তবে তিনি তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন দলকে সংস্কার করুন। এভাবে রাজনৈতিক দল চলে না। খালেদা জিয়া যতদিন সুস্থ ছিলেন দলে কোনো সমস্য হয়নি। তার অনেক কথায় ফুটে উঠেছে তারেক রহমানের কারণে দলে অসন্তোষ, ফলে দলটি ভাঙার পথে? জবাবে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, গত পাঁচ বছর থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে, দক্ষতার সঙ্গে ও অত্যন্ত নিয়মতান্ত্রিক দলটিকে সংঘবদ্ধভাবে পরিচালনা করছেন। এর জন্যই এই বীভৎস সময়টুকু পার করতে সক্ষম হয়েছি। বিএনপিকে ভাঙতে সরকার কাজ করছে, অভিযোগ করা হয় সেটি কি পুরোপুরি সত্যি? প্রশ্নোত্তরে রুমিন বলেন, দল ভাঙার উদ্দেশে গত ১৭ বছর ধরে বিএনপির ওপর সিস্টেম্যাটিক রিপ্রেসন চালাচ্ছে সরকার। সেটি এমনভাবে রিপ্রেসন চলেছে যেটি, একটি দলের বিরুদ্ধে আরেকটি দলের রিপ্রেসন না। একটি দলের বিরুদ্ধে পুরো রাষ্ট্রের রিপ্রেসন। সেটিকে মোকাবিলা করে যেহেতু বিএনপি টিকে আছে। সরকার বারংবার চেষ্টা সত্ত্বেও ভাঙা তো দূরেই থাক, এখন পর্যন্ত সরকার বিএনপির জনপ্রিয় কোনো ব্যক্তিকে সরাতে পেরেছে? আমরা দেখেছি, একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী যখন বিএনপি থেকে চলে গেলেন এবং নতুন বিকল্পধারা তৈরি করলেন, সেটি কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিকেনি। তার ব্যক্তিগত প্রোফাইল উজ্জ্বল কম ছিল না, তার পরও টিকতে পারেননি। একই পরিণীতি বহন করতে হয়েছে কর্নেল অলিকে। তিনি এলডিপি করেছেন। কিন্তু সেই এলডিপি এখন বিএনপি জোটের সঙ্গে। আরও পেছনে যদি যায়, মান্নান ভূঁইয়াকে দেখেছি তিনিও আর রাজনীতিতে টিকতে পারেনি। নো বডি হয়েই তাকে পৃথিবী থেকে চলে যেতে হয়েছে। তারও আগে যদি যাই, বিএনপি যখন আশির দশকে, সেই সময় বিএনপি ভাঙার একটা প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু সফল হয়নি। রুমিন আরও বলেন, সুতরাং বিএনপি থেকে চলে গিয়ে অতীতে কেউ ভালো কিছু করতে পারেনি। একই কথা আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যে, আওয়ামী লীগ থেকে চলে গিয়ে বড় কিছু করেছে সে নজিরও নেই। ইতিহাস পর্যালোচনা করে যদি দেখি, তা হলে দেখতে পাব, বিএনপির ভাঙার কোনো সম্ভাব না আছে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না। তবে একই সঙ্গে বলতে চাই— এতবড় একটি দল, সেখানে নানা মত থাকবে, ব্যক্তিগত অসন্তোষ থাকতে পারে, ব্যক্তিগত সন্তুষ্টি থাকতে পারে, ব্যক্তিগত মতামত থাকতে পারে, সেটি যে কেউ দিতে পারে। প্রশ্ন হতে পারে মেজর হাফিজ তা হলে কেন প্রেস কনফারেন্স করলেন? আমি একজন ক্ষুদ্র রাজনৈতি কর্মী হিসেবে মনে করি, তিনি সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছেন। কারণ তার আগেই তথ্যমন্ত্রী তার ব্যাপারে কথা বলেছে। সে কথা ভেসে বেড়াচ্ছিল। সেই সময় হয়তো সাংবাদিকরা পৃথক পৃথক যোগাযোগ করছিল হয়তো। সে জন্য সবাইকে একসঙ্গে ডেকে কথা বলেছেন। সেখানে মেজর হাফিজ স্পষ্ট করে বলেছেন, বিএনপি যদি নির্বাচনে যায়, সে দল থেকেই তার নির্বাচনে যাওয়া উচিত এবং বিএনপির হয়েই নির্বাচনে অংশ নেবেন।