দূষণ মোকাবিলায় পারমাণবিক শক্তি তিনগুণ বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি

প্রকাশিতঃ ডিসেম্বর ২, ২০২৩ | ৯:৫৯ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে কপ-২৮ সম্মেলন। চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবারের জলবায়ু সম্মেলনে দূষণ মোকাবিলায় পারমাণবিক শক্তির তিনগুণ বৃদ্ধি চেয়ে একটি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছে ২০টিরও বেশি দেশ। শনিবার ১৩ দিনব্যাপী এই সম্মেলনের তৃতীয় দিনে ঘোষণাপত্রটিতে স্বাক্ষর করে দেশগুলো। ২০২০ থেকে ২০৫০ সালের মধ্যে পরিবেশে কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমনের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনার প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে পারমাণবিক শক্তিবৃদ্ধি চায় তারা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু করে ঘানা, জাপান ও ইউরোপের দেশগুলো ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছে। এছাড়া স্বাক্ষরকারী অন্যান্য দেশের মধ্যে আছে যুক্তরাজ্য, বুলগেরিয়া, কানাডা, চেক প্রজাতন্ত্র, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, হাঙ্গেরি, দক্ষিণ কোরিয়া, মলদোভা, মঙ্গোলিয়া, মরক্কো, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, সুইডেন, ইউক্রেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। কার্বনের পরিমাণ কমানোর লক্ষ্য হিসাবে পারমানবিক শক্তি একটি ‘মূল ভূমিকা’ পালন করে বলে মনে করছে কপ-২৮ সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলো। সম্মেলনে মার্কিন জলবায়ু বিষয়ক রাষ্ট্রদূত জন কেরি বলেন, শক্তির অন্যান্য সব উৎসের চেয়ে এটি একটি সুস্পষ্ট বিকল্প হতে চলেছে, এ বিষয়ে আমরা কোনো নিশ্চয়তা দিচ্ছি না। তবে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার ছাড়া ২০৫০ সালের মধ্যে পরিবেশে কার্বনের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনা সম্ভব নয়। আর এটি শুধু বৈজ্ঞানিক বাস্তবতা। এর সঙ্গে কোনো রাজনীতি অথবা মতাদর্শ জড়িত নয়। যদিও জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প হিসাবে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার নিয়েও যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। অনেক সময় পারমাণবিক বর্জ্য ফেলার স্থান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে থাকে বিভিন্ন পরিবশেবাদী সংগঠনগুলো। এছাড়া বৃহৎ পারমাণবিক প্রকল্পের ঝুঁকি ও উচ্চ খরচের দিকে ইঙ্গিত করে অনেকেই এর বিরোধিতা করেছেন। তবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রসি এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘কয়েকটি প্রকল্পে সমস্যার কারণে পারমাণবিক শক্তি প্রত্যাখ্যান করা হবে একটি ভুল কাজ।’ পারমাণবিক শক্তিকে একটি নির্ভরযোগ্য নির্গমন-মুক্ত শক্তির একটি অপরিহার্য উৎস মনে করেন এর সমর্থকরা। কপ-২৮ সম্মেলনের তৃতীয় দিনেই ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষমতা তিনগুণ করার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে ১১৭ দেশ। দুবাইয়ের কপ-২৮ প্রেসিডেন্ট সুলতান আল জাবের জানিয়েছে, চলতি দশকের শেষ নাগাদ বিশ্বব্যাপী নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা কমপক্ষে ১১ হাজার গিগাওয়াটে আনতে দেশগুলো একসঙ্গে কাজ করবে। কপ-২৮ সম্মেলনে অংশ নেননি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার পরিবর্তে শনিবার সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। এতে অংশ নিয়ে বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিলে যুক্তরাষ্ট্রের ৩ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। কমলা হ্যারিস বলেন, ‘বিশ্ব জলবায়ু সংকট মোকাবিলা কিভাবে করা যায় তা আজ আমরা কর্মের মাধ্যমে প্রদর্শন করছি।’ একই দিনে তেল ও গ্যাসশিল্পে গ্রিনহাউজ গ্যাসের আরেক উপাদান মিথেন নির্গমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।