পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরাম বলেছেন, হারিস রউফ যদি চান তিনি ক্রিকেটে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন, তাহলে তার টেস্ট খেলার বিকল্প নেই। সীমিত ওভারে, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে রউফ পাকিস্তানের অন্যতম ভরসা হলেও এখন পর্যন্ত টেস্ট খেলেছেন মাত্র একটি। টেস্ট ক্রিকেটকে ‘বড়দের খেলা’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রউফের টেস্ট খেলা ঘিরে নতুন আলোচনা শুরু হয় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে দল ঘোষণার পর থেকে। নতুন প্রধান নির্বাচক ওয়াহাব রিয়াজ দাবি করেন, শুরুতে দলে থাকার ব্যাপারে সম্মত হলেও শেষ মুহূর্তে এ সিরিজের দলে তাকে বিবেচনা করতে না করেন রউফ; যদিও ওয়াহাবের এমন দাবি ঠিক মেনে নেননি রউফ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনাক্রমে পাকিস্তান যখন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট খেলবে, রউফ তখন সেখানেই খেলবেন বিগ ব্যাশ লিগ। প্রাথমিকভাবে বিলম্ব করলেও শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার এই টি-টোয়েন্টি লিগ শুরুর আগেই পিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা রউফকে অনাপত্তিপত্রও দিয়েছে পিসিবি।
কায়ো স্পোর্টসের গ্রীষ্মের ক্রিকেট উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রউফকে নিয়ে কথা বলেন আকরাম, যিনি এ সিরিজে ধারাভাষ্য দেবেন। রউফের টেস্ট না খেলতে চাওয়ার ব্যাপারে পাকিস্তানি এই কিংবদন্তি বলেন, ‘এটি তার সিদ্ধান্ত। সে চুক্তিতে থাকা খেলোয়াড়, ফলে দেশে তাকে নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে। এ সময় সাদা বল বিশেষজ্ঞ বেশ কজন ক্রিকেটার আছে… যদি সে ভাবে সে এখনো সেখানে পৌঁছায়নি, তাহলে সেটি তার সিদ্ধান্ত।’
‘টেস্ট ক্রিকেট দিনশেষে বড়দের খেলা। আপনাকে আট ওভারের স্পেলে বোলিং করতে হবে। টি-টোয়েন্টিতে আপনি চার ওভার বোলিং করেন, ফাইন লেগে দাঁড়িয়ে থাকেন। ‘পিস অব কেক’ (সহজ ব্যাপার),’ বলেন ওয়াসিম আকরাম।
গত ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের একমাত্র টেস্টটি খেলেন রউফ; যদিও প্রথম ইনিংসে ১৩ ওভার বোলিং করে চোট পেয়ে উঠে যান, এর পর আর নামেননি।
আকরাম যোগ করেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট লম্বা একটা দৌড়। আপনি যদি এ খেলায় বড় খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে স্মরণীয় করে রাখতে চান, তখনই টেস্ট ক্রিকেটের ব্যাপারটি আসবে।’
এমনিতে ১৪ ডিসেম্বর থেকে পার্থ টেস্ট দিয়ে শুরু হওয়া এ সিরিজে পাকিস্তান পাচ্ছে না নাসিম শাহকে। শাহিন শাহ আফ্রিদির সঙ্গে পেস বোলিংয়ে পাকিস্তানের ভরসা হাসান আলী ও অনভিজ্ঞ কয়েক পেসার। ২৮ বছর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট না জেতা পাকিস্তানের জন্য কাজটি এবারও সহজ হবে না, মনে করেন আকরাম।
তিনি বলেন, ‘কঠিন হবে, শেষ পাকিস্তান জিতেছে ১৯৯৫ সালে। নতুন অধিনায়ক, নতুন ম্যানেজমেন্ট। সময় লাগবে। আদর্শ একটা ব্যবস্থায় কোনো তরুণ অধিনায়ক বা দলের জন্য এ সফরে আসা ঠিক সেরা কোনো ব্যাপার নয়। এটি বেশ কঠিন হবে তাদের জন্য। বড় একটা পরীক্ষা হবে।’
তবে এর একটি ইতিবাচক দিকও দেখেন অস্ট্রেলিয়ায় পাকিস্তানকে দুটি সিরিজে নেতৃত্ব দেওয়া আকরাম, ‘আমার মতে, এটা এক ধরনের শাপেবর। নতুন অধিনায়কের জন্য কঠিন শুরু, তবে তারা যদি এখানে ভালো করতে পারে, শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ানদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারে, তাহলে ভবিষ্যতের জন্য এটি তাদের অনেক উৎসাহ দেবে।’