হামাসকে টেলিফোনে যে আহ্বান জানালেন রুশ মন্ত্রী

প্রকাশিতঃ ডিসেম্বর ১২, ২০২৩ | ৮:৪৬ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের হাইকমান্ডের সঙ্গে রাশিয়ার উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখাইল বোগদানভ টেলিফোনে কথা বলেছেন। ফোনালাপে হামাসকে তাদের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আরও পড়ুন: ১০০ এমপি ও ৩০০ ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র বিবৃতিতে বলা হয়েছে রোব ও সোমবার হামাসের পাশাপাশি পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন স্বাধীনতাকামী জোট প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও), প্যালেস্টাইনিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন, পপুলার ফ্রন্ট ফর লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন বোগদানভ। ফিলিস্তিনের নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপে গাজার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সেখানে যুদ্ধবিরতির পক্ষে রাশিয়ার দৃঢ় অবস্থানের কথাও উল্লেখ করেছেন এবং পিএলও’র প্রস্তাব অনুসারে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। এর আগে রোববার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ গাজার মানবিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য একটি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দলকে সেখানে পাঠানোর দাবি জানিয়েছিলেন। হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ প্রসঙ্গে রাশিয়ার অবস্থান তুলে ধরে মন্ত্রী বলেছিলেন, হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলাকে কঠোরভাবে নিন্দনীয়, তবে সেই হামলার শাস্তি হিসেবে গাজায় টানা অভিযান এবং তার জেরে হাজার হাজার নিরপরাধ বেসামরিক ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ-শিশুর নিহত হওয়াও একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা ইসরাইলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বিমান বাহিনী। পরে ১৬ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও। ইসরাইলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা, নিহত হয়েছেন ১৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহত এই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ১২ হাজারেরও বেশি। অন্যদিকে, হামাস যোদ্ধাদের হামলায় ইসরাইলে নিহত হয়েছিলেন ১ হাজার ২০০ জন ইসরাইলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। পাশাপাশি, ইসরাইলের ভূখণ্ড থেকে ২৪২ জন ইসরাইলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের ধরে নিয়ে গিয়েছিল হামাস যোদ্ধারা। দেড় মাসেরও বেশি সময় যুদ্ধের পর অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নতি স্বীকার করে গত ২৫ নভেম্বর অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ এবং হামাস। গত নভেম্বরের মাঝামাঝি যুদ্ধের অন্যতম মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারের মাধ্যমে ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা বরাবর একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল হামাসের হাইকমান্ড। সেই প্রস্তাবে গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইসরাইল যদি গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে, রাফাহ ক্রসিংয়ে অপেক্ষারত ত্রাণ, জ্বালানি ও মানবিক সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ করতে দেয় এবং ইসরাইলি কারাগারগুলো থেকে অন্তত ১৫০ জন বন্দিকে মুক্তি দেয়, তাহলে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে ৫০ জনকে ছেড়ে দেবে হামাস। সেই প্রস্তাব মেনে নিয়ে ২৫ নভেম্বর চার দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইসরাইল। পরে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিসর, ইউরোপ ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীদের তৎপরতায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও তিন দিন বাড়ানো হয়। সূত্র : রয়টার্স