ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর জেল থেকে বেরিয়ে দীর্ঘদিনের দল বিএনপির ধানের শীষ ছেড়ে উঠেছেন আওয়ামী লীগের নৌকায়। ঝালকাঠি-১ আসনে নৌকার প্রার্থী তিনি। এই আসনটিতে তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান মনির। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল শুনানিতে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর সাংবাদিকদের স্বতন্ত্র প্রার্থী মনির বলেছেন, ‘কে হেভিওয়েট, কে হেভিওয়েট না, সেটা জনগণ ব্যালটে ঠিক করবে। অন্য দল থেকে এসে নৌকা পাওয়া প্রার্থীকে হেভিওয়েট মনে করি না।’ ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন চেয়েছিলেন ২২ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা বর্তমানে দলটির কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য মনিরুজ্জামান মনির। কিন্তু বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর পান এই আসনের নৌকার টিকিট। ওই দিনই শাহজাহান ওমরকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। প্রধানমন্ত্রী দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত করে দিলে নির্বাচনের ঘোষণা দেন মনির। তবে প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে তার প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে আজ (মঙ্গলবার) শুনানিতে ফিরে পেয়েছেন প্রার্থিতা। মনির বলেন, ২০০৮ সাল থেকে আমি দলের কাছে মনোনয়ন চেয়ে যাচ্ছিলাম। ২০ থেকে ২২ বছর সরাসরি আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। কিন্তু দল আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। এলাকাবাসী, দলীয় নেতাকর্মীদের চাপের কারণে ও দলের পজিটিভ চিন্তার কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমি মনোনয়নপত্র তুলেছি। আপনার এলাকায় নৌকার মনোনয়ন যিনি পেয়েছেন তিনি তো হেভিওয়েট প্রার্থী– সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনির বলেন, ‘কে হেভিওয়েট, কে কম ওয়েটের প্রার্থী সেটা জানি না, আমি তো ছোটখাটো মানুষ। আমার ওজন কম হতেই পারে। যে লম্বা-চওড়া, তিনি তো হেভিওয়েট হতেই পারেন। কিন্তু চিন্তা বা বিবেচনার বিষয় হওয়া উচিত পলিটিক্যালি আমি কতটুকু কমিটেড। আমি আদর্শিক কিনা, দলের প্রতি, জনগণের প্রতি কমিটেড কিনা।’ শাহজাহান ওমরকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ নেতা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনির আরও বলেন, ৪৫ বছর ধরে একটি দলের (বিএনপি) রাজনীতি করলাম, হঠাৎ অন্য দলে এসে নির্বাচনে অংশ নিলাম। আমি কোনো সাংঘর্ষিক বক্তব্য দিতে চাই না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। তবে তার বাইরে দলের সিদ্ধান্ত, দলীয় কোনো মনোনয়নপ্রত্যাশী চাইলে স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে পারবেন। সেই জায়গায় আমি জনগণ, দলীয় নেতাকর্মীদের চাপে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। আমি প্রত্যাশা করি, আগামী ৭ জানুয়ারি জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে রায় দেবেন কে হেভিওয়েট আর কে হেভিওয়েট প্রার্থী না।’