মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পদ্মা নদীতে বাল্কহেডে চলছে ব্যাপক চাদাঁবাজি। চাদাঁ না দেওয়ায় আজ শনিবার (১৬ ডিসেম্বর)এক বাল্কহেড সুপার ভাইজারকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। প্রতিনিয়তই চাদাঁ পরিমান কম বেশি নিয়ে বাল্কহেড চালক ও বাল্কহেডে থাকা অন্যান্য লোকজনকে মারধোর করা হচ্ছে।জানাগেছে, মুন্সীগঞ্জের পদ্মা নদী হয়ে প্রতিদিন শত শত বালুবাহী বাল্কহেড চলে । এ সমস্ত বাল্কহেডগুলো যমুনা ও পদ্মা নদী হতে বালু নিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে বিক্রি করে থাকেন। লৌহজং উপজেলার ডহুরী,শামুরবাড়ি, ভরাকুল গাওদিয়া এলাকায় এ সমস্ত বালুবাহী বাল্কহেডে দির্ঘদিন যাবৎ চাদাঁবাজি করে আসছেন একটি চক্র। এই চক্রের রয়েছে ৬টি ট্রলার। ওই ৬টি ট্রলারের মালিক ১৫ জন। প্রতিটি ট্রলারে ৩ জন করে মোট ১৮ জনকে দিয়ে এ চাদাঁবাজী করিয়ে থাকেন ট্রলার মালিকরা। নির্ভরযোগ্য সুত্র জানায়, ট্রলার মালিক ১৫ জন মাঝে মধ্যে চাদাঁ তুলতে নদীতে যান। তাদের রয়েছে মাসিক ও দৈনিক মজুরিতে মোট ৬টি ট্রলারে ১৮ জন নিযুক্ত ব্যাক্তি তাদের দিয়েই চাদাঁ তুলেন ওই সমস্ত ট্রলার মালিকরা। বিনিময়ে ওই চাদাঁ তোলার কাজে নিয়োজিত ব্যাক্তিদের প্রতিদিনি ৮ থেকে ৯ শত করে টাকা দিয়ে থাকেন। সুত্রটি আরো জানায় একেবারে গরীব প্রকৃতির উঠতি বয়সি ছেলেরা টাকার লোভে এ চাদাঁ তোলার কাজ করে থাকে। তবে নদীতে পুলিশী অভিযানে কেউ গ্রেফতার হলে কিংবা মামলা হলে ট্রলার মালিকরা ঠিকমতো এ চাদাঁ উত্তোলন কাজে নিয়োজিত ব্যাক্তিদের খোজঁ খবরও নেননা। পেটের দায়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে চাদাঁ তুলছেন ওই এলাকায় ১৮জন উঠতি বয়সের যুবক।শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) ঢাকা হতে পদ্মা নদী হয়ে যমুনা নদীতে বালু আনতে যাচ্ছিলো এম মিরাজ আলি নামের বাল্কহেড। পদ্মা নদীর গাওদিয়া নামক স্থানে ওই বাল্কহেডটিকে আটক করে চাদাঁ দাবী করেন গাওদিয়া গ্রামের রুবেল মাদবর ও আলামিন মাদবর নামের দুই ভাই। তারা গাওদিয়া গ্রামের হোসেন মাদবর এর ছেলে । এ সময় ওই ট্রলারে থাকা সুপার ভাইজার মোঃ লিটন টাকা বেশি দিতে অস্বীকার করায় তাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন আলামিন ও রুবেল মাদবর । এ ব্যাপারে এম মিরাজ আলি বাল্কহেডের সুপারভাইজার মোঃ লিটন বলেন,ঢাকা হতে বালু আনার জন্য পদ্মা নদী হয়ে যমুনা নদীতে যাচ্ছিলাম । লৌহজংয়ের গায়দিয়া এলাকার পদ্মা নদীতে আসলে রুবেল মাদবর ও আলামিন মাদবর সহ কয়েকজন আমাদের বাল্কহেডে উঠে এসে বলে তাদের ৫ হাজার টাকা চাঁদা দিতে। আমি এ সময় বলি আগেতো আপনাদের ৫০০ করে টাকা চাঁদা দিতাম। এবার কেন ৫০০০ টাকা দিবো বলিলে ওরা ওদের হাতে থাকা পাইপ ও লাঠি দিয়া আমাকে পিটিয়ে গুরুতর যখম করে । আমার বালু কিনার জন্য বাল্কহেডে থাকা ৬৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।ওই বাল্কহেডের লস্কর সোবহান বলেন, রুবেল ও আলামিন ওঠে আমাদের সুপাই ভাইজারকে মারছে। এ সময় আমি বলি আপনাদেরতো সব সময় আমরা ৫০০টাকা দেই । আজ কেন বেশি চাচ্ছেন ওরা বলে পাচঁ হাজার করে টাকা না দিলে তোরা এ নদী দিয়ে বাল্কহেড চালাতে পারবিনা। তিনি আরো বলেন লৌহজংয়ের ভরাকুল, ডহুরী, গাওদিয়া এলাকা হতে আমাদের কাছ থেকে প্রতিদিন চাদাঁ নেয়।ওই বাল্কহেডের চালক মোঃ শামীম বলেন,ঢাকা হতে বের হয়ে যমুনা নদী হতে বালু নিয়ে আবার ঢাকায় ফেরতে আমাদের বিভিন্ন স্থানে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা চাদাঁবাজদের দিতে হয়ে । শরিয়তপুর জেলার সিডারচর বাবুরচর মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার গাওদিয়া, ভরাকুল এলাকায় প্রতিদিনি আমরা চাদাঁ দিয়ে থাকি। আজ লৌহজং এলাকার গাওদিয়া পদ্মা নদীতে আসলে রুবেল আলামিন ৫ হাজার টাকা চায়। আগে আমরা তাদের ৫ শত করে টাকা দিতাম । এনিয়ে কথা কাটাকাটি হলে তারা আমাদের সুপার ভাইজার লিটনকে মেরে আহত করে আমাদের বাল্কহেডে থাকা ৬৫হাজার টাকা নিয়ে গেছে।একটি সুত্র জানায় ভরাকুল, ডহুরী , শামুরবাড়ি, গাওদিয়া এলাকায় পদ্মা নদীতে দির্ঘদিন যাবৎ চাদাঁবাজি করে আসছেন রাজু ঢালী নামের এক ব্যাক্তি। বর্তমানে লৌহজং হলপট্রি এলাকার শাহাবুদ্দনি মাদবর,লৌহজংয়ের গাওঁদিয়া গ্রামের রুবলে মাদবর ও আল আমনি মাদবর নামের আপন দুই ভাই ট্রলার দিয়ে চাদাঁবাজি করিয়ে থাকেন। শাহাবুদ্দিন মাদরব স্পীড ভোট নিয়ে চাদাঁবাজি করেন। অন্যদিকে শামুরবাড়ি গ্রামের রাজু ঢালী ট্রলার নিয়ে নিজে ও লোকজন দিয়ে চাদাঁবাজি করিয়ে থাকেন। এদিকে আলামিন এবং রুবলে দুই ভাইয়রে রয়েছে দুটি ট্রলার। তারা লোকজন নিয়ে ২৪ ঘন্টায় নদীতে থাকেন এবং চাদাঁবাজি করেন।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রুবেল মাদবর বলেন, আমি চাদাঁ তোলার কাজ অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছি এখোন ৪০/৫০ জনের একটি সেন্ডিকেট নদীতে চাদাঁবাজি করে থাকে। বাল্কহেড চালককে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন চাদাঁর জন্য নয় অন্য কারনে তাদের মারা হয়েছে।এ ব্যাপারে লৌহজং থানার ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, পদ্মা নদীতে চাদাঁবাজির ঘটনায় আগে একাধিক মামলা হয়েছে। বল্কহেড চালকদের মারধরের ঘটনায় কেই অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নওয়া হবে।