ভারতের উত্তর-পূর্ব ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হল বাংলাদেশের ৫২তম বিজয় দিবস। এদিন সকালে ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। পৃথকভাবে রাজ্যের আরও বিভিন্ন স্থানে উদযাপন করা হলেও আগরতলার কুঞ্জবনে অবস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ছিল বিজয় দিবসের মূল আয়োজন। এদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ও শহিদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ। পরে একে একে রাজ্যের বুদ্ধিজীবীসহ সবাই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতির পিতা ও স্মৃতিসৌধে। এ সময় মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। তাছাড়াও আলোচনা সভায় মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এসময় মহান মুক্তিযুদ্ধের সব আত্মত্যাগকারী শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া প্রার্থনা করা হয়। পরে রাজ্যের রাজধানী আগরতলার লিচুবাগান এলাকায় অ্যালবার্ট এক্কা পার্কে ভারতীয় সেনাবাহিনীর শহিদ স্মৃতিসৌধ এবং পরম বীরচক্রপ্রাপ্ত শহিদ অ্যালবার্ট এক্কার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ। হাইকমিশন কার্যালয় চত্বরের সভায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাসের ইতিহাস তুলে ধরে বিস্তর আলোচনা করেছেন রাজ্যের বিশিষ্টজনরা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- ত্রিপুরা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার রামপ্রসাদ পাল, ত্রিপুরা বিধানসভার সাবেক স্পিকার রেবতী মোহন দাস, ত্রিপুরা রাজ্য থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা প্রাপ্ত অধ্যাপক নিহিত দেব, মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা প্রাপ্ত সাংবাদিক স্বপন ভট্টাচার্য বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা প্রাপ্ত আওয়াল মিঞা, শাহাজান ভুইয়া, হিমায়েত উদ্দীন কালাম প্রমুখ। এসময় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রথম সচিব রেজাউল হক চৌধুরী ও মো. আল আমিনসহ কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ তার বক্তব্যে বলেন, মহান বিজয় দিবস জাতীয় জীবনে এক অনন্য গৌরবময় দিন। বিজয়ের এই মহান দিনে সেইসব অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধা জানাই। যারা দেশের স্বাধীনতা অর্জনে জীবন উৎসর্গ করেছেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। সেইসঙ্গে তিনি জাতীয় চার নেতাসহ মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এসময় আরিফ মোহাম্মদ বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে একটি আত্মিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই থেকে ভারত তথা ত্রিপুরাবাসী বাংলাদেশের মানুষের আত্মার আত্মীয়।