অবৈধভাবে ক্ষমতার মেয়াদ বাড়াতেই সরকার ‘একতরফা’ নির্বাচন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, সরকারের কৌশলটাই হলো নির্বাচনের নামে তাদের মেয়াদ আরও ৫ বছর বৃদ্ধি করা। আমরা জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়েছি, এই নির্বাচনের নামে পাতানো খেলা ‘আমি ডামি’র নির্বাচন প্রতিহত করুন, বর্জন করুন। বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা যখন মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম আমরা একটা বাংলাদেশের জন্য লড়াই করেছিলাম। আমরা এমন একটা দেশের জন্য লড়াই করেছিলাম যেখানে আমরা যাকে নির্বাচিত করব, জনগণ যাকে নির্বাচিত করবে তারা দেশ পরিচালনা করবে। কিন্তু ২০১৪, ২০১৮ সালে সেই সুযোগ থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি… আরেকবার আমাদেরকে বঞ্চিত করার অপচেষ্টা চলছে।’ জনগণের উদ্দেশে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, এই অন্যায়ে আপনারা সহযোগিতা করবেন না। নিজে নিজে যেমনে পারে করুক, তারা চেষ্টা করছে করুক। কিন্তু আপনি অন্তুত এটার সাথী হবেন না। আপনি যদি ডাকাতি ঠেকাতে না পারেন অন্তত ডাকাতের সাথে যুক্ত হবেন না, ডাকাতিতে সহযোগিতা করবেন না। এই হলো আপনাদের কাছে আমাদের অনুরোধ। যে অন্যায় করে তাকে সহযোগিতা করাটাও অন্যায়। সেজন্য আমরা বলেছি, এই অন্যায়ের সাথে থাকবেন না। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির চিকিৎসক সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ড্যাব) এর উদ্যোগে ডামি নির্বাচন বর্জন, অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে চিকিৎসকদের এই মানববন্ধন হয়। পরে চিকিৎসকদের নিয়ে নজরুল ইসলাম খান পথচারীদের কাছে ভোট বর্জনের লিফলেট বিতরণ করেন। এতো কোটিপতি আসে কোত্থেকে? নজরুল ইসলাম খান বলেন, পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে যে, যারা এখন নির্বাচন করছে তাদের বিপুল সংখ্যক প্রার্থী কোটিপতি। এতো কোটিপতি আসে কোত্থেকে বাংলাদেশে? আমরা ২২ পরিবারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ করলাম… আর আজ ২২‘শ পরিবার তৈরি হয়ে গেল। আপনারা শুনেছেন, প্রায় ৮ লক্ষ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লুট হয়ে গেছে। কারা এই টাকা লুট করেছে? সরকার কি জানে না, সরকার কি তাদের ধরতে পারে না? কিন্তু ধরে না। সরকার কোনো না কোনোভাবে তা জানে, কারণ তারা হয় সরকারি দলের অথবা সরকারি দলের পক্ষের লোক। এর ফলে কি হচ্ছে? এর ফলে বাংলাদেশে আরও দরিদ্র হয়ে যাচ্ছে। আসলে জিডিপিতে যা দেখানো হয় সেখানে একট বড় হিসাব… এখন একজন কোটিপতি আর আপনার… দুই জনের ইনকাম যদি যোগ করে দুই দিয়ে ভাগ করা হয় তাহলে আপনিও তো ৫০ লক্ষ টাকার মালিক হয়ে গেলেন। এই অংকে কোনো লাভ নাই। আমরা দেশের গরীব মানুষ বাজারে গেলে যখন দেখে যে, গরীব মানুষ তার উপার্জিত অর্থ দিয়ে কিছু কিনতে পারছে না… তখন এই অংক তার কাছে কোনো অর্থ বহন করে না। এই অংক তাকে ফাঁকি দেওয়ার কৌশল মাত্র। সেজন্য আমরা বলি যদি এই দেশটাকে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই… তাহলে দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নাই, বলেন নজরুল ইসলাম খান। ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে ড্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল কবির লাবু, ওবায়দুল কবির খান, শহিদ হাসান, মোস্তাক রহিম স্বপন, সিরাজুল ইসলাম, পারভেজ রেজা কানন, এ্যামট্যাবের দবির উদ্দিন তুষার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।