রাজশাহী-৪ আসনে এবার এনামুলের ৭ কর্মীকে পেটাল নৌকার সমর্থকরা

প্রকাশিতঃ ডিসেম্বর ২৮, ২০২৩ | ৮:৫৪ অপরাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

রাজশাহী-৪ আসনে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ সাত নেতাকর্মীকে পিটিয়েছে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা। বুধবার বিকালে বাগমারা উপজেলার শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রকৌশলী এনামুল হকের কাঁচি প্রতীকের প্রচার চালানোর সময় তাদের ওপর হামলা হয় বলে বাগমারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেব খান জানান। আহতদের মধ্যে শ্রীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বজলুর রহমান ও ইউনিয়ন যুবলীগ সদস্য আলমগীর হোসেনকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে জিল্লুর ডান পায়ের হাড় ফেটে গেছে। আর বজলুর রহমানের হাত ভেঙে গেছে। জিল্লুর রহমান সংসদ সদস্য এনামুল হকের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী। জিল্লুর রহমান জানান, শ্রীপুর গ্রামে দুপুর থেকে তারা ১০-১২ জন কাঁচি প্রতীকের প্রচার চালান। বিকেলে তারা শ্রীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি চায়ের দোকানে লোকজনের মাঝে কাঁচি প্রতীকের প্রচারপত্র বিলি করছিলেন। এ সময় নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের ২০ থেকে ২৫ জন কর্মী মোটরসাইকেলে এসে তাদের উপর হামলা করে এবং পিটিয়ে জখম করে। এ সময় তারা তিনটি মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে যায়। তাদের হাতে লাঠি, লোহার রড ও ধারালো হাসুয়া ছিল। জিল্লুর রহমান বলেন, “হামলার আগে বুঝতে পেরে আমি বাগমারা থানার ওসিকে ফোন দিয়েছিলাম। থানা থেকে ঘটনাস্থল তিন মিনিটের পথ। কিন্তু ওখানে কেন গেছি উল্টো প্রশ্ন করে ফোন কেটে দেন ওসি। পুলিশ কোনো সহযোগিতা দেয়নি। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।” এদিকে, রাত ৯টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহতদের দেখতে যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তিনবারের সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রকৌশলী এনামুল হক। তিনি আহতদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন। এনামুল হক বলেন, “এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হবে। আমি এসব ঘটনার বিচার দাবি করি প্রশাসনের কাছে।” তিনি অভিযোগ করেন, “এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ শান্ত বাগমারাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছেন। যখন তখন যত্রতত্র আমার লোকজনকে পেটাচ্ছে। তবে বাগমারাবাসী এসব নির্যাতনের জবাব দেবে ব্যালটের মাধ্যমে। আমি শুধু ধৈর্য্য ধরে দেখে যাচ্ছি আর প্রশাসনের কাছে বিচার দিচ্ছি। কিন্তু মানুষের ধৈর্য্যেরও তো লিমিট আছে। “নৌকার সমর্থকরা এ পর্যন্ত কাঁচি প্রতীকের ২৬টি নির্বাচনি ক্যাম্প ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। উপজেলার ২৮ স্থানে কাঁচির কর্মীরা হামলার শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫৫ জন”, দাবি করেন এনামুল। এ ব্যাপারে জানতে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদকে রাতে মোবাইলে ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। বাগমারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেব খান বলেন, “খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নৌকার প্রার্থীর লোকজন বেশ কয়েকজনকে মারপিট করে আহত করেছেন। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” রাজশাহীর এ আসনে ভোটের লড়াইয়ে আছেন মোট ছয়জন। তারা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক (কাঁচি), তাহেরপুর পৌরসভার টানা তিনবারের মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ (নৌকা), উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেব (লাঙ্গল), বিএনএমের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম রায়হান, এনপিপির জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবুল হোসেন।