নির্বাচন কমিশন থেকে বাদ পড়া তিন হেভিওয়েট প্রার্থীর আপিল শুনানির অপেক্ষায় আছে। প্রার্থিতা ফিরে পেতে দুজন গত সপ্তাহে সুপ্রিমকোর্টে আপিল দায়ের করেন। তারা হলেন বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবং বরিশাল-৪ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাম্মী আহমেদ। এছাড়া ফরিদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শামীম হকের প্রার্থিতা বাতিলের জন্য আপিল করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ। এই তিন প্রার্থীর বিষয়টি সুরাহার জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে ২ জানুয়ারি শুনানির জন্য ধার্য রয়েছে। ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ উপলক্ষ্যে ভোটে অংশ নেওয়া দলগুলোর প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে। এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসি থেকে বাদ পড়া অর্ধশতাধিক প্রার্থী উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, স্বতন্ত্রসহ বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা আছেন। বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি শনিবার বলেন, দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ তুলে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়ন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে শুনানি নিয়ে প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশে স্থগিতাদেশ দেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এরপর সাদিক আবদুল্লাহ চেম্বার আদালতে আবেদন করলে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। শুনানিতে প্রার্থিতার পক্ষে আইনি দিক তুলে ধরা হবে বলে তিনি জানান। সুপ্রিমকোর্ট সূত্র জানায়, ১২ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন আইন ও বিধি সংক্রান্ত বিষয়াদিসহ জরুরি রিটের শুনানি গ্রহণ করতে হাইকোর্ট বিভাগে দুটি বেঞ্চ গঠন করেন প্রধান বিচারপতি। বেঞ্চগুলো হলো বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর বেঞ্চ এবং বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের বেঞ্চ। ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত এ দুই বেঞ্চকে এ সংক্রান্ত রিট শুনানির এখতিয়ার দিয়ে প্রধান বিচারপতি আদেশ জারি করেন। সূত্র জানায়, ১০ ও ১১ ডিসেম্বর প্রথম দফায় প্রার্থিতা বাতিল করে ইসির দেওয়া সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন ২৪ প্রার্থী। কয়েক দফায় আরও প্রায় অর্ধশত প্রার্থী রিট আবেদন করেন। ক্রমান্বয়ে সব আবেদনের শুনানি হয়। এসব বেঞ্চ থেকে যারা প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন-মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহানা তাহমিনা, টাঙ্গাইল-৬ স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহমুদুল ইলাহ, মানিকগঞ্জ-২ তৃণমূল বিএনপির মো. জসীম উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর-২ স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিনা ইসলাম, রাজশাহী-১ স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. গোলাম রব্বানী, বগুড়া-৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফেরদৌস স্বাধীন ফিরোজ, খুলনা-৪ স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম মোর্ত্তজা রশিদী দারা, নওগাঁ-২ স্বতন্ত্র প্রার্থী এইচএম আকতারুল আলম, সিরাজগঞ্জ-৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. শাখাওয়াত হোসেন এবং ময়মনসিংহ-৯ আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেজর জেনারেল (অব.) এমএ সালাম। প্রার্থিতা ফেরত পান গণতন্ত্রী পার্টির একাংশের সাতজন। তারা হচ্ছেন ভূপেন্দ্র চন্দ্র ভৌমিক (কিশোরগঞ্জ-১), মো. আশরাফ আলী (কিশোরগঞ্জ-২), দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া (কিশোরগঞ্জ-৩), মো. মোজাম্মেল হোসেন ভূঁইয়া (নীলফামারী-৩), মিহির রঞ্জন দাশ (সুনামগঞ্জ-২), মো. খায়রুল আলম (পাবনা-৩) ও মো. মতিউর রহমান (খুলনা-২)। এছাড়াও প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন কুমিল্লা-৭ স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ, ফেনী-৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল কাশেম আজাদ, চট্টগ্রাম-৫ স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ নাছির হায়দার করিম, রাজবাড়ী-১ ও ২ স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আ. মান্নান মুসল্লী, ময়মনসিংহ-৫ স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম, কুমিল্লা-১ স্বতন্ত্র প্রার্থী নাঈম হাসান, কুমিল্লা-৯ বিএনএমের প্রার্থী মো. হাছান মিয়া, কুড়িগ্রাম-৪ স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফারুকুল ইসলাম এবং টাঙ্গাইল-৪ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) প্রার্থী এসএম আবু মোস্তফা।