২ শতাংশ ভোটও পাননি, কে এই বিএনএম প্রতিষ্ঠাতা খোকন!

প্রকাশিতঃ জানুয়ারী ৮, ২০২৪ | ১০:২২ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

বেতাগী, বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত বরগুনা-২ আসনে ভোটারের উপস্থিতি কম থাকলেও কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই শেষ হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে বরগুনা-২ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে নিজ দলের কোনো হেভিওয়েট প্রার্থী না থাকলেও স্বতন্ত্র ও বিভিন্ন দল থেকে মোট প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সাতজন প্রার্থী। এর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনএম) থেকে বরগুনা-২ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন কিংস পার্টি খ্যাত দলটির শীর্ষনেতা (প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক) ড. আবদুর রহমান খোকন। তবে নিজ এলাকায় তার জনপ্রিয়তা এতটাই ক্ষীণ যে গ্রহণ করা ভোটের মধ্যে ২% ভোটও পাননি তিনি। যা নিয়ে নিজ এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে। নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী তিনি নির্বাচনি জামানতও হারাবেন বলে নিশ্চিত ধারণা করছেন অনেকেই। কেউ কেউ বলছেন অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই তিনি একটি দল তৈরি করে নিজ এলাকা বরগুনা-২ আসন থেকে নিবার্চনে অংশ নেন। এমনকি আত্মীয়দের ভোটও পাননি তিনি- এমনটাই মন্তব্য করেন স্থানীয়রা। কে এই খোকন বরগুনায় ১২ দিনের এমপি হিসেবে খ্যাত আ. রহমান খোকন; যার বাবা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীনতাবিরোধী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে তৎকালীন বরগুনা-১ আসন (সদর-বেতাগী) আসনে তিনি এমপি হিসেবে নির্বাচিত হন। যিনি সদ্য প্রকাশ পাওয়া কিংস পার্টি খ্যাত বিএনএম নামক রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক। ৮০-এর দশকে বরগুনা জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহ্বায়ক ও তৎকালীন বরিশাল জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন খোকন। কর্মজীবনে বেতাগী ডিগ্রি কলেজে টানা ১৬ বছর শিক্ষকতার পর ওই কলেজেরই অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কয়েক বছর। পরে বিএনপির মূলদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন কয়েক বছর। একই বছর সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে ১৮ হাজার ৭০৩ ভোট পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হন। ফাঁকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গেও নিজেকে জড়ান খোকন। কিছুদিন পর নিজ এলাকায় উদ্যোক্তা হিসেবে শুরু করেন গুরুর খামার। পরে রাজনৈতিক মাঠে অবস্থান তৈরি না করতে পেরে ঢাকায় যান তিনি এবং বর্তমানে রাজধানীর প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান ও ডিন হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। তবে তার কোনো সময়ই শক্ত অবস্থান ছিল না বরগুনা-২ আসনের রাজনৈতিক মাঠে। হঠাৎ করে গত আগস্টে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিবন্ধন পায় খোকনের গঠিত কিংস পার্টি খ্যাত বিএনএম দলটি; যা নিয়েও খোকনের নিজ এলাকায় শুরু হয় নানা সমালোচনা। এবার ভোট গ্রহণের পর ব্যাপকভাবে আবার সমালোচিত হয়েছেন বিএনএম নেতা খোকন। স্থানীয় একাধিক সাধারণ ভোটার জানান, বিএনএমের নেতা আবদুর রহমান খোকন একজন সুবিধাবাদী লোক। ফলে নিজ আত্মীয়দের ভোটও পাননি। তার নিজ শ্যালকসহ পরিবারের একাধিক সদস্য ছিলেন তারই বিপক্ষে। এছাড়াও বিএনএম নামক দলটিকে নির্বাচন কমিশনের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানান স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। বরগুনা-২ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৭ হাজার ২৪৭টি। এর মধ্যে ১১৪টি কেন্দ্রে মোট ভোট গ্রহণ হয়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৬৮৪টি। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সুলতানা নাদিরা ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩২টি এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনএম (নোঙর) খোকন পেয়েছেন ১৯৫১টি ভোট; যা মোট প্রদান করা ভোটের ১.২৬ %। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোট গ্রহণ।