গজারিয়ার হোসেন্দী ইউনিয়নের নাজিরচর গ্রামে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসন থেকে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়সাল বিপ্লবের ৯ সমর্থকদের বাড়ি ও ৩টি দোকানে হামলা-লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় নারীসহ আহত হয়েছেন অন্তত ১১ জন। ৩৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর। আহতরা হলেন- আবদুর রশিদ (৬০), জোসনা বেগম (৫০), ফারুক (৩২), সুফিয়া (৫৫), জয় (১৩), ইয়াফি (১৩), জেরিন (২০), মৌ (১৮), সোনিয়া (২৬), সাহিদা (৩৫), রিনা (৩০)। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং বাকিদের কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হামলায় আহত ফারুক বলেন, আমরা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী ফয়সাল বিপ্লবের সমর্থক ছিলাম। প্রথম থেকেই নৌকা সমর্থক হোসেন্দী এলাকার মাহবুব মিয়ার লোকজনের সঙ্গে আমাদের বিরোধ ছিল। নির্বাচনে ফয়সাল বিপ্লব জয়লাভ করায় তারা আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। সোমবার সন্ধ্যায় আমরা আনন্দ মিছিলের আয়োজন করি। বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে আনন্দ মিছিল বের করার আগমুহূর্তে মাহবুব মিয়ার ছোট ভাই সৈকত বাবুর নেতৃত্বে ৪০-৫০ জন আমাদের বাড়ি এবং দোকানে হামলা চালায়। প্রথমে তারা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে তারপর একের পর এক বাড়ি ঘরে হামলা ভাঙচুর এবং লুটপাট চালাতে থাকে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার আলী, সিরাজুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ, আল আমিন, বাবুল মিয়া, আলেক মিয়া, জাকির হোসেনের বাড়ি এবং তিনটি দোকানে ভাঙচুর এবং লুটপাট চালায় তারা। আমরা তাদের বাধা দিলে নারীসহ অন্তত ১১ জনকে মারধর এবং কুপিয়ে জখম করা হয়। নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল সেট এবং ঘরের মূল্যবান লুট করে তারা। পরবর্তীতে পুলিশ আসলে তারা পালিয়ে যায়। হামলায় আহত জেরিন বলেন, ‘শুধু পুরুষ নয় নারীদেরও তারা ছাড় দেয়নি। নারকীয় কায়দায় যে সামনে এসেছে তাকেই তারা মারধর করেছে।’ হামলায় আহত জোসনা বেগম বলেন, ‘আমাকে মারধর করে আমার ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে নগর টাকা এবং স্বর্ণালংকারসহ অন্তত ৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে তারা।’ গজারিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লাইনম্যান তুষার ইমরান বলেন, আমাদের খবর দেওয়া হলে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে একাধিক ঘরের মিটার ভেঙে ফেলার বিষয়টি দেখতে পাই। কয়েকটি ঘরের বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. খন্দকার আরশাদ কবির বলেন, ‘সন্ধ্যা সাতটার দিকে হামলায় আহত পাঁচজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। চিকিৎসা চলছে।’ বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বিস্তারিত পরে জানাব। বিষয়টি সম্পর্কে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।