রাজশাহী নগরীর সাহেববাজারের আরডিএ মার্কেটের একটি দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাত ৮টার দিকে আরডিএ মার্কেটের সামনের অংশে ‘মেসার্স এক নম্বর গদি’ নামের এই মুদি ও মনিহারি দোকানের গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১০টি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এক নম্বর গদি রাজশাহীর প্রায় ২০০ বছরের পুরনো একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এটির মালিক ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি। এটির নিচতলায় দোকান। দোতলায় রয়েছে গুদাম আর কর্মচারীদের থাকার ব্যবস্থা। সেখানে কর্মচারীরা রান্না করতেন। রান্নার চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আরডিএ মার্কেটের প্রবেশপথের ডানপাশে মেসার্স এক নম্বর গদি অবস্থিত। এর দোতলায় দাউ দাউ করে আগুন লাগে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন পুরো মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। আগুন মার্কেটের ভেতরে ছড়িয়ে পড়লে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হতো। তিনতলা এই মার্কেটের পরিবেশ একেবারেই ঘিঞ্জি। সামনের সাহেববাজারের রাস্তা ছাড়া তিনপাশে সরু গলি। সেদিক দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি গিয়ে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা নেই। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে এই মার্কেটটিকে দুইবার অগ্নিকাণ্ডের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে সতর্কতামূলক ব্যানার টানানো হয়েছে। কিন্তু রাতারাতি সেসব ব্যানার মার্কেটের সামনে থেকে গায়েব হয়ে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহীর উপপরিচালক ওহিদুল ইসলাম জানান, ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট একসঙ্গে প্রচেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। দোতলায় গুদামের পাশে কর্মচারীদের রান্নার ব্যবস্থা ছিল। সেখানে লাকড়ি পুড়িয়ে রান্না করা হতো। আবার গ্যাসের সিলিন্ডারও ছিল। গ্যাস সিলিন্ডার, চুলার আগুন নাকি বৈদ্যুতিক শর্টসাকির্ট থেকে আগুন লেগেছিল তা এখনই বলা যাচ্ছে না। এটি তদন্তের পর বলা যাবে। তিনি বলেন, এই মার্কেটের আশপাশে পানির আধার নেই। ফায়ার সার্ভিসের কাজ করার মতো পরিবেশও নেই। পুরো মার্কেটে আগুন ছড়িয়ে পড়লে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হতো। এখন পর্যন্ত তারা এক নম্বর গদির ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করতে পারেননি। আর গুদামে কেউ না থাকার কারণে হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি। এক নম্বর গুদামে আগুনের খবর পেয়ে অসুস্থ শরীর নিয়ে ছুটে আসেন ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি। আসেন সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী-২ আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বাদশা। মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, এই মার্কেটটি অগ্নিকাণ্ডের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ। এটি ভেঙে নতুন করে মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।