ক্যারিয়ারের ২৫তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের লক্ষ্যে বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে নামছেন হট ফেবারিট নোভাক জকোভিচ। কিন্তু কব্জির ইনজুরি ও তরুণ স্প্যানিয়ার্ড কার্লোস আলকারাজের হুমকি পিছনে ফেলে নাম্বার ওয়ান জকোভিচ নিজেকে কতটা প্রমাণ করতে পারেন সেটাই এখন দেখার বিষয়। গত বছরের ফাইনালে স্টিফানোস সিতসিপাসকে হারিয়ে রেকর্ড ১০ম বারের মত মেলবোর্ন পার্কে শিরোপা জয় করেছিলেন ৩৬ বছর বয়সী জকোভিচ। একইসাথে ২০২৩ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেন ও ইউএস ওপেনের শিরোপা জয় করার মধ্য দিয়ে দারুণ একটি বছর কাটিয়েছেন। কিন্তু উত্তেজনাকর উইম্বলডনের ফাইনালে আলকারাজের সাথে আর পেরে উঠেননি। ২০ বছর বয়সী আলকারাজ গত বছর হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে পারেননি। এবার দুটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ও র্যাঙ্কিংয়ের দুই নম্বর স্থান নিয়ে তিনি মেলবোর্নের কোর্টে নামতে যাচ্ছেন। টেনিস বিশ্বের অন্যতম প্রতিভাবান তরুণ হিসেবে ইতোমধ্যেই বেশ সমাদৃত হয়েছেন আলকারাজ। জকোভিচের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী রাফায়েল নাদাল পায়ের পেশীর ইনজুরির কারনে রোববার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বছরের প্রথম এই গ্র্যান্ড স্ল্যামকে সামনে রেখে নাদালের স্বদেশী আলকারাজ প্রস্তুতি মূলক টুর্নামেন্টে অংশ নেননি। এর ফলে ২০২৪ সালটা এখন তিনি অনেকের জন্যই রহস্যময় রয়ে গেছে। ইউনাইটেড কাপে সার্বিয়ার হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ান এ্যালেক্স ডি মিনরের কাছে ৬-৪, ৬-৪ গেমে পরাজিত হবার মধ্য দিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ৪৩ ম্যাচ জয়ের ধারা থেকে বেরিয়ে এসেছে জকোভিচ। তার সাথে যুক্ত হয়েছে ডান কব্জির ইনজুরি। ইউনাইটেড কাপে দুই ম্যাচেই তাকে ইনজুরির কারনে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয়েছে। ডি মিনরের কাছে হারের পর জকোভিচ বলেছেন, ‘আমি মনে করি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের আগে নিজেকে সঠিকভাবে ফিরিয়ে আনতে আমি যথেষ্ঠ সময় পাবো। এই মুহূর্তে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে আমি সবসময়ই সেরা পারফর্ম করতে চাই।’ ডেভিস কাপে ইয়ানিস সিনারের কাছে পরাজয়ের মধ্য দিয়ে ২০২৩ মৌসুম শেষ করেছেন জকোভিচ। আর তার প্রভাব পড়েছে ইউনাইটেড কাপে। ২০১৮ সালের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে কোন ম্যাচে হারেননি জকোভিচ। মেলবোর্ন পার্কে সেমিফাইনাল ও ফাইনালে তার রেকর্ড ২০-০। জকোভিচ বলেছেন, ‘যখন আমি ফিট থাকি, পারফরমেন্সের সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকি তখন আমি স্ল্যাম কিংবা অন্য যেকোন টুর্ণামেন্টে জিততে পারি। ঐ সময় আমার মধ্যে কোন ধরনের ভীতি কাজ করে না। আমি আরো বেশী রেকর্ড ভাঙ্গতে চাই, টেনিসে আরো বেশী করে ইতিহাস গড়তে চাই, এটা এখন আর গোপন কোন বিষয় নয়।’ নাদালের ২২ স্ল্যামকে ছাড়িয়ে সবচেয়ে সফল খেলোয়াড় হিসেবে ইতোমধ্যেই রেকর্ড গড়েছেন জকোভিচ। মেলবোর্নে তিনি আবারো জিততে পারেন তবে অস্ট্রেলিয়ান সাবেক নারী খেলোয়াড় মার্গারের্ট কোর্টের ২৪টি স্ল্যাম শিরোপার রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যাবেন। এর জন্য অন্তত তাকে নাদালের কঠিন লড়াইয়ের অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না। ৩৭ বছর বয়সী এই স্প্যানিয়ার্ড গত সপ্তাহে কোমরের ইনজুরি কাটিয়ে দীর্ঘ এক বছর পর কোর্টে ফিরলেও ব্রিসবেনে আবারো পায়ের ইনজুরিতে পড়েছেন। অস্ট্রেলিয়ান ওপেন থেকে যে কারনে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এতে ধরেই নেয়া হয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় নাদালের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে। ব্রিসবেনে নাদাল এ ব্যপারে ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিলেন ২০২৪ সাল তার ক্যারিয়ারের শেষ বছর হবার সম্ভাবনা খুব বেশী। ২০২১ ও ২০২২’এ মেলবোর্ন ফাইনালিস্ট রাশিয়ান দানিল মেদভেদেভ শেষ পর্যন্ত জকোভিচের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারেন। আলকারাজের মত তিনিও ওয়ার্ম-আপ ইভেন্টে অংশ নেননি। কিন্তু ২০২৩ সালে ৬৬টি ম্যাচে জয়ী হয়ে নিজেকে দারুনভাবে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। ২৭ বছর বয়সী মেদভেদেভ ২০২১ সালে ক্যারিয়ারের একমাত্র স্ল্যাম শিরোপা ইউএস ওপেন জয় করেছেন। গত বছরের ফাইনালিস্ট সিতসিপাসকেও হিসেবের বাইরে রাখা যায়না। এছাড়া বিশ্বের পাঁচ নম্বর খেলোয়াড় আন্দ্রে রুবলেভও আলোচনায় রয়েছেন। আগামী রোববার থেকে শুরু হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের এবারের আসর।