কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর সলেমানপুর পালপাড়া পরিবারের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। বহুমুখী সমস্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সংকটের মুখে পড়েছে এই শিল্প। তারপরও পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য এখনও ধরে রেখেছেন অনেকেই। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সলেমানপুর পালপাড়ার বিজয় পাল (৪৫) পিতা :মৃত্যু : অন্তত পাল তিনি বলেন। দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প হচ্ছে মাটির শিল্প। মাটির তৈরি শিল্পকর্মকে আমরা বলি মৃৎশিল্প। কারণ, এ শিল্পের প্রধান উপকরণ হলো মাটি। এ কাজে পরিষ্কার এঁটেল মাটির প্রয়োজন হয়। কেননা, এঁটেল মাটি বেশ আঠালো। দোআঁশ মাটি তেমন আঠালো নয়। আর বেলে মাটি তো ঝরঝরে—তাই এগুলো দিয়ে মাটির শিল্প হয় না। বাঙালি জীবনের হাজার বছরের ঐতিহ্য বহনকারী মাটির তৈরি সামগ্রীর চাহিদা কমতে থাকায় উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন শিল্পটি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। কিন্তু কালের বিবর্তনে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে এই শিল্পের প্রসার। অনেকে এ পেশায় থাকলেও মাটির তৈরি সামগ্রীর চাহিদা না থাকায় অভাব-অনটনে সংসার চালাতে পারছেন না তারা। একবেলা আধবেলা খেয়ে দিনানিপাত করছেন অনেক মৃৎশিল্পী। এক সময়ের কর্মব্যস্ত ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা সলেমানপুর পালপাড়ার সব এখন নিরবতা। মৃৎশিল্পী পুরান পাল (৪০) সমির পাল (৫০) বেমো পাল বলেন, যুগ যুগ ধরে বংশ পরম্পরায় আমরা মাটির জিনিস তৈরি করে আসছি। এ পেশার সঙ্গে আমরা জড়িত থাকলেও আমাদের উন্নয়নে বা আর্থিক সহায়তায় সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সরকারি ও বিভিন্ন এনজিও বা সমিতি থেকে সহযোগিতা পেলে হয়তো বাপ-দাদার আমলের স্মৃতিকে ধরে রাখা সম্ভব হতো। এ ব্যাপারে সরেজমিন উপজেলার সলেমানপুর গ্রামের বিজয় পাল সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বাপ-দাদার কাছে শেখা আমাদের এই জাত ব্যবসা আজও আমরা ধরে রেখেছি।এই গ্রামে ১৮ ঘর মৃৎ শিল্প ছিলাম, অনেকে মৃৎশিল্পী কাজ ছেড়ে অন্য ব্যবসা করছে। এই ব্যবসায় আর মাত্র ৫ ঘর মৃৎ শিল্প কাজ করছি। এই গ্রামের আশপাশে সহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বিজয় পালের। পরিবারের অতিহ্য একসময় মাটির তৈরি জিনিসের ব্যাপক চাহিদা ছিল কিন্তু বর্তমানে বহুমুখী সমস্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ সংকটের মুখে পড়েছে এই মৃৎ শিল্পটি।