মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার গঙ্গারামখালী গ্রামের মালোপাড়া ও বিশ্বাসপাড়ার অন্তত ১৫টি পরিবারের সকল বাড়িঘর, গাছপালা ও ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। হুমকির মুখে রয়েছে আরো অন্তত অর্ধ-শতাধিক পরিবারের বাড়ি-ঘর, গাছপালা ও ফসলী জমি। এ ঘটনায় এলাকাবাসী চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। গত রবিবার সরেজমিন গেলে ভুক্তভোগী কুমারেশ চক্রবর্তী ও অন্যরা জানান, নদী ভাঙন রোধ করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘আলিয়ার রহমান’ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের নদী শাসন প্রকল্পের আওতায় জি. ও ব্যাগ ভরার জন্য বসতি এলাকার নিচ থেকেই কিছুদিন আগে বালু উত্তোলন করে। সে সময় তাদের দূর থেকে বালু উত্তোলনের জন্য বলা হলেও তারা তা তোয়াক্কা না করে বালু উত্তোলন করে। গত কয়েকদিন ধরে এলাকার বিভিন্ন বাড়ির ঘর ও উঠানে ফাটলের সৃষ্টি হয়। শুক্রবার থেকে দিনরাত এক একটা ঘর, গাছপালা নদীর মধ্যে ভেঙে পড়ছে ও তলিয়ে যাচ্ছে। বর্ষা মৌসুম এলেই এ ভাঙনে পুরো গ্রাম নদীর নিচে চলে যাবে বলে মনে হচ্ছে। এই মালো পাড়া ও বিশ্বাসপাড়ার বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, দিলীপ, শুকুমার, সুবোধ, মধুসূদন, নারায়ন, সঞ্জিত, বৈকুণ্ঠ, নিখিল, সরজিৎ, নীরোদের বাড়ি-ঘর গাছপালা সব নদীর মধ্যে চলে গেছে। এদিকে ফাটল ধরেছে অমরেশ, বিনয়, উজ্জ্বল, কালাচাঁদ, অমল, রবি, শ্যামল, সুবোল, তপন, গোপাল, কৃষ্ণ, অসিত, মনজিৎ, বিশ্বজিৎ, শৈলেন, সাধন, অচিন্ত্য, সুভাষ, রমেশ, শ্রীকান্ত, আনন্দ, হারাণসহ প্রায় ৫০টির উপরে পরিবারের বাড়ি-ঘর গাছপালা ও চাষের জমি। এ নিয়ে আমরা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। নদী ভাঙ্গনে সংবাদ পেয়ে শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়েছেন। এ বিষয়ে ঠিকাদারের প্রতিনিধি এরশাদ জানান, তারা বাঁধের কাজে ব্যবহারের জন্য বালু উত্তোলন করা হয়েছে। কিন্তু তাদের ধারণা ছিলো না বিষয়টি এমন হবে। মাটি ধ্বসে পরবে। এ বিষয়ে মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান সুজন জানান, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। নতুন করে জিওবি ব্যাগ দিয়ে বাঁধা হবে। যারা ঘর-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন, তাদের ব্যাপারে প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে।