ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে ড্রাগন ফলের চাষ। এ দিকে সন্ধ্যা নামলেই বৈদ্যুতিক বাতির ঝলকানি দেখতে ওই বাগানে ভীড় করছেন, উৎসুকজনতা। বাড়তি ফল উৎপাদনের আশায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে দেড় বিঘা জমিতে এ পদ্ধতিতে চাষ করছেন বলে জানিয়েছেন,চাষি রেহমানুল কবির (রাজ)। জানা যায়, কোটচাঁদপুর তালসার সড়কের পারলাট মাঠ এটি। এ সড়কের পাশেই দেড় বিঘা ড্রাগন ফলের বাগান চাষি রেহমানুল কবির (রাজুর)। ২০২১ সালের দিকে এ বাগানটি করেন তিনি। ওই সময় দেড় বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করতে ব্যয় হয়েছিল সাড়ে ৪ লাখ টাকা। এ বছর ওই বাগানেই বাল্ব পদ্ধতিতে চাষ করতে আবারও ব্যয় করেছেন আরো ৩ লাখ টাকা। এদিকে সন্ধ্যা নামলেই বৈদ্যুতিক বাতিগুলো জ্বলে উঠছে বাগানটি। এ সময় দুর থেকে দেখলে বাগানটিকে তারার মেলা বলে মনে হচ্ছে। যা দেখতে প্রতিনিয়ত ওই সড়কে ভীড় করছেন উৎসুকজনতা। এর মধ্যে কেউ আসছেন চাষ পদ্ধতিসহ দেখতে। আবার কেউ আসছেন আলোর ঝলকানি উপভোগ করতে। বিষয়টি নিয়ে ড্রাগন চাষি রেহমানুল কবির (রাজু) বলেন, গেল ২০১৮ সালে মাত্র ১৫ কাঠা জমিতে দিয়ে ড্রাগন চাষ শুরু করা হয়। বর্তমানে ১০ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ। তিনি আর বলেন, এক বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষ করতে ব্যয় হয় ৩ লাখ টাকা। তবে বৈদ্যুতিক পদ্ধতিতে চাষ করতে ব্যয় হবে আরো ২ লাখ টাকা। আপনি কেন এ পদ্ধতিতে চাষ করার সিদ্ধান্ত নিলেন আর কোথায় পেলেন এ প্রযুক্তি এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সাধারণভাবে চাষ করলে ৬ মাস ফল উৎপান করা যায়। আর বৈদ্যুতিক পদ্ধতিতে চাষ করলে আরো ২/৩ মাস ফল উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে মনে করছি। এ জন্য মাত্র দেড় বিঘা জমিতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে এ পদ্ধতিতে চাষ শুরু করলাম। ভাল ফল পেলে বাকি আরো ৮ বিঘা জমিতে চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। রাজু বলেন, ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ড উপজেলার এক চাষি এ পদ্ধতিতে চাষ করে ভাল ফল পেয়েছেন। আমি ওই বাগানে দেখে এসে চাষ শুরু করেছি। তিনি বলেন, দেড় বিঘা জমিতে ১৭ শ ড্রাগন গাছ রয়েছে। আর খুটি রয়েছে ৪ শ ৩০ টি। ৪ ফুট ব্যবধানে বৈদ্যুতিক বাতি গুলো ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। ওই বাগানে ৫ শ ৫০ টি বাতি দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় ৩শ হেক্টরের উপর জমিতে ড্রাগনের চাষ আছে। সাধারণত গাছ থেকে চাষিরা বছরে দুই বার ড্রাগন সংগ্রহ করতে পারতো। এ পদ্ধতিতে চাষ করলে তারা সারা বছর গাছ থেকে ড্রাগন সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে এতে যেমন খরচ আছে, তেমনি চাষি লাভবানও হবেন। কোটচাঁদপুরে এ পদ্ধতিতে চাষ শুরু হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা আমার জানা নাই। আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম ওই পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেছেন চাষিরা। এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কিনা,জানতে চাই ওই কর্মকর্তা বলেন, বিদেশে এ পদ্ধতিতে চাষ আছে। আপনারা আরেকটু নিশ্চিত হতে পারবেন ইউটিউব দেখলে।