বিশ্ব ইজতেমায় মাওলানা সাদের আগমন নিশ্চিতের দাবি

প্রকাশিতঃ জানুয়ারী ৩১, ২০২৪ | ১১:১৯ অপরাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

আসন্ন বিশ্ব ইজতেমায় তাবলিগের বিশ্ব আমির দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সাধারণ মুসল্লি পরিষদ। আগামী ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ইজতেমায় তার যোগ দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। বুধবার রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে সাধারণ মুসল্লি পরিষদ ঢাকা জেলার উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা এই দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা মিসবাহুর রহমান চৌধুরী, নেজামে ইসলাম পার্টির চেয়ারম্যান মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষক সমিতির মহাসচিব মাওলানা আতাউর রহমান আতিকী, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল হক প্রমূখ। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তাবলিগের চলমান সংকটে উভয়পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে সর্বপ্রথম করণীয় হলো, উভয়পক্ষের মাঝে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। অথচ আমরা লক্ষ্য করছি, বিগত কয়েক বছর যাবৎ একচেটিয়াভাবে একপক্ষকে ইজতেমার প্রথম পর্বে অংশগ্রহণ করানোসহ তাদের সব শীর্ষ মুরুব্বিদের নির্বিঘ্নে উপস্থিতির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। যদিও তাদের শীর্ষ মুরুব্বিদের উপস্থিতি সত্ত্বেও দুই হাজারের অধিক বিদেশি মুসল্লি আনতে ব্যর্থ হচ্ছেন তারা। তাদের দাবি, প্রতিবছর দ্বিতীয় পর্বে ইজতেমা করতে বাধ্য করার পাশাপাশি তাদের সর্বোচ্চ আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এরপরেও প্রতিবছর সাদপন্থি দশ হাজারের অধিক বিদেশি মুসল্লি ইজতেমায় অংশগ্রহণ করছেন। যা মাওলানা সাদ কান্ধলভীর উপস্থিতি নিশ্চিত হলে কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি উভয়পক্ষের দূরত্ব নিরসন হবে। এছাড়াও কাকরাইল মসজিদে আমল বণ্টনে একপক্ষকে অগ্রাধিকার প্রদান, সারা দেশের মসজিদগুলোতে মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের বাধাপ্রদান, মারধর, ইজতেমার ময়দান সারা বছর একপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া ও প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিমাতাসুলভ আচরণে অপরপক্ষ দীর্ঘদিন যাবত বঞ্চনার শিকার হয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে। বক্তারা প্রশ্ন তোলে বলেন, মাওলানা সাদ কান্ধলভী গত এক বছরে বিশ্বব্যাপী ৩৭২টি ইজতেমা পরিচালনাসহ বিভিন্ন দেশ সফর করতে পারলে বাংলাদেশে আসতে বাধা কোথায়? তবে কি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো উগ্রমহলের ভয়ে বিদেশি মেহমানের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন? ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, দেশে কিছু কিছু আলেম আছেন, যারা অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করেন। কিন্তু যখন দেশে একজন সংগীতশিল্পী আসেন তখন তো প্রতিবাদ করতে দেখি না। মাওলানা সাদ আসার কথা শুনলেই তখন প্রতিবাদ করেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। মিসবাহুর রহমান আরও বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের কথা দিয়েছিলেন, এবারের বিশ্ব ইজতেমায় মাওলানা সাদ আসবেন। জানি না কি কারণে তাকে আসতে দিচ্ছেন না। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা কথা বলব, ইনশাআল্লাহ মাওলানা সাদ বাংলাদেশে আসবেন। আগামী ৯, ১০ ও ১১ ফেব্রুয়ারির বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেবেন এবং বয়ান দেবেন। ফয়সালা যদি আসমানে হয়, তাহলে জমিনে রুখে দেওয়ার কে? দেশের উন্নয়ন, ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠা, মানবতার জন্য আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।’ যারা মসজিদে হামলা করেছে তারা ইসলামের লোক হতে পারে না। তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। মানববন্ধনে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা, উভয়পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ করা ও বিশ্ব ইজতেমার ঐতিহ্য রক্ষার স্বার্থে সাধারণ মুসল্লিদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। তারা বলেন, আমাদের একমাত্র দাবি হলো, এই মুহূর্তে তাবলিগের বঞ্চিতপক্ষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ নিবারণের স্বার্থে প্রথম পক্ষের মতো দ্বিতীয় পক্ষের সর্বোচ্চ মুরুব্বি মাওলানা সাদের উপস্থিতি বিশ্ব ইজতেমায় যেকোনো মূল্যে নিশ্চিত করুন