নগদ সহায়তার হারে পরিবর্তন পোশাকশিল্পের জন্য সহায়ক ও সময়োপযোগী নয়; বরং এটি শিল্পে অনাকাঙ্খিত ঝুঁকি ও বিপর্যয় ডেকে আনবে। বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা করে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত অর্থনীতির দিকে অগ্রসর হতে শিল্প ও দেশের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ। বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। বিজিএমইএ-এর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নগদ সহায়তার প্রজ্ঞাপনের ফলে পোশাক খাতে প্রচলিত প্রণোদনার প্রায় ৭০ শতাংশ কর্তন করা হয়েছে। অংশীজনদের সঙ্গে কোনো প্রকার পূর্ব-আলোচনা ছাড়া হঠাৎ এরকম একটি গুরুতর সিদ্ধান্ত শিল্পকে চরমভাবে বিপর্যস্ত করবে। বিশেষ করে যখন প্রধান রপ্তানি বাজারগুলোর পোশাক আমদানি ও চাহিদা ভালো নয় এবং স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির চাপে রয়েছে শিল্প; তখন এরকম একটি পদক্ষেপ শিল্প ও অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে না। বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের যে নিম্নমুখী প্রবণতা ও ব্যালেন্স অব পেমেন্টে যে চাপ রয়েছে, সেই বাস্তবতায় এরকম একটি পদক্ষেপ অর্থনীতির জন্য মোটেই সহায়ক নয়, বরং তা এ সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে। এতে আরও বলা হয়েছে, এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে ডব্লিউটিও কমপ্লায়েন্ট পদ্ধতিতে বিকল্প প্রণোদনা প্রবর্তনের বিষয়ে সার্কুলারে উল্লেখ নেই। যদিও অনেক মধ্যম আয়ের দেশ তাদের শিল্পের জন্য সরাসরি প্রণোদনা না দিয়ে বিকল্প প্রণোদনা দিয়ে আসছে। বিকল্প প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়টি দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে। বিকল্প ব্যবস্থা না করে হঠাৎ প্রচলিত ব্যবস্থা কর্তন শিল্প ও অর্থনীতির জন্য সহায়ক পদক্ষেপ বলে আমরা মনে করি না। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রণোদনা প্যাকেজ যখন কাটছাঁট করা হচ্ছে, তখন প্রতিযোগী দেশগুলো তাদের শিল্পের জন্য সহায়তা বৃদ্ধি করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ভিয়েতনামের এফটিএ গত বছর কার্যকর হয়েছে, ফলে ইউরোপে তাদের শুল্ক প্রায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে, যা ২০৩০ নাগাদ শুল্কমুক্ত হবে। পক্ষান্তরে ২০২৯ সালের পর বাংলাদেশ ডাবল ট্রান্সফরমেশনের চ্যালেঞ্জে পড়বে। এরকম একটি সময়ে ডব্লিউটিও বিধান অনুযায়ী যতদিন স্বল্পোন্নত দেশের সুবিধা ভোগ করছি, ততদিন নগদ সহায়তাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দেওয়া অধিক যুক্তিযুক্ত ছিল, যার মাধ্যমে শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে পারতাম। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনে ৫টি প্রধান রপ্তানি পণ্যের ওপর নগদ সহায়তা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। পণ্যগুলো হলো টি-শার্ট, সুয়েটার, নিটেড শার্ট, পুরুষদের আন্ডার গার্মেন্ট এবং ওভেন ট্রাউজার ও জ্যাকেট।