“ভালো কাজের নাগরিক অনুশীলন স্বীকৃতি দিবে মাগুরা জেলা প্রশাসন”

প্রকাশিতঃ ফেব্রুয়ারী ১, ২০২৪ | ১০:৫২ অপরাহ্ন
মোঃ সাহিদুল ইসলাম নয়ন সদর উপজেলা প্রতিনিধি মাগুরা সদর মাগুরা

এই প্রতিপাদ্যকে উপজীব্য করে গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে নিম্নোক্ত ১১ জন ব্যক্তি ও সংগঠনকে তাদের ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ জেলা প্রশাসন, মাগুরা এর পক্ষ থেকে সম্মাননা জানান মান্যবর বিভাগীয় কমিশনার, খুলনা জনাব মো: হেলাল মাহমুদ শরীফ : ০১. জনাব প্রদ্যুৎ কুমার রায়, পিতা- সুশান্ত কুমার রায়, মাতা- শক্তি রায়, ঠিকানা- সাধুখালী, উপজেলা- বালিয়াকান্দি, জেলা- রাজবাড়ী। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি একজন জাতীয় ক্রীড়া ভাষ্যকারও। তিনি ২০০৪ সাল থেকে স্থায়ীভাবে মাগুরায় বসবাস করছেন। ২০০০ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ধারাভাষ্য প্রদান এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থাপনায় যুক্ত আছেন। ২০১৬ সালে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোগ্রামে ১ম শ্রেণিতে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ক্রীড়া ভাষ্যকার হিসেবে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ বেতারে নিয়মিত ধারাভাষ্য প্রদানের পাশাপাশি বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড, বৈশাখী টেলিভিশন, এটিএন বাংলা, কলকাতা দূরদর্শন, রেডিও স্বাধীন, ৯২.৪ এফএম এবং স্টার ক্যাবল নেটওয়ার্কে (লোকাল টিভি) কাজ করছেন। এছাড়া, ২০০৭ সাল থেকে \"শুভেচ্ছা প্রিপারেটরি স্কুল, মাগুরা\" নামক একটি বেসরকারি স্কুল ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষকতা করার পাশাপাশি তিনি মাগুরা সদর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ০২. জনাব আব্দুল হান্নান মোল্যা, পিতা- মরহুম রুকমান মোল্যা, মাতা- কুলছুম বিবি, গ্রাম- বড়খড়ি, উপজেলা- মাগুরা সদর, জেলা- মাগুরা। পেশায় তিনি একজন কাঠমিস্ত্রি। কাঠমিস্ত্রির কাজ করাকালীন তাঁর বাড়িতে ইঁদুরের উপদ্রব দেখা দিলে তিনি নিজের কাঠের কারখানায় তৈরি যন্ত্র দিয়ে বেশকিছু ইঁদুর মারা শুরু করেন। পরবর্তীতে, প্রতিবেশীদের অনুরোধ এবং নিজ ইচ্ছায় ইঁদুর মারার কলাকৌশল প্রতিবেশীসহ গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে প্রয়োগ করে সাফল্য পান। এভাবে তিনি ২০০৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সমগ্র দেশে প্রায় ২৩ (তেইশ) লক্ষ ইঁদুর মেরেছেন। জনাব আব্দুল হান্নান মোল্যা ইঁদুর মারার জন্য মোট ১৩ (তেরো) প্রকারের যন্ত্রপাতি এবং ০২ (দুই) প্রকারের ঔষধ ব্যবহার করেন। এছাড়া তিনি সমগ্র দেশে তাঁর তৈরি ইঁদুর মারার যন্ত্রপাতি কুরিয়ারের মাধ্যমে প্রেরণ করেন এবং বিভিন্ন কৃষি ফার্ম ও অফিসে গিয়ে ইঁদুর নিধন করে থাকেন। তাঁর এ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ইঁদুর নিধনে তিনি জেলা পর্যায়ে ০৪ (চার) বার এবং জাতীয় পর্যায়ে ০৫ (পাঁচ) বার পুরস্কারে ভূষিত হন। পাশাপাশি তিনি সমাজের ভবঘুরে যুবকদের কাঠমিস্ত্রির কাজ এবং রিক্সা/ভ্যান তৈরির প্রশিক্ষণ প্রদান করে এ পর্যন্ত ৪৫ জন ব্যক্তির কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়া তিনি তাঁর গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বাল্যবিবাহ রোধে প্রচারণা চালিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কার্যকরী ভূমিকা রেখে চলছেন। ০৩. জনাব এড: শাহিনা আক্তার (ডেইলী), পিতা- মরহুম প্রফেসর শাহাদত আলী, মাতা- শামসুন নাহার, গ্রাম- কলেজপাড়া, উপজেলা- মাগুরা সদর, জেলা- মাগুরা। পেশায় তিনি একজন আইনজীবী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে অধ্যয়ন সম্পন্ন করে ১৯৯১ সালে আইন পেশায় তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতির প্রথম মহিলা আইনজীবী। লিগ্যাল এইড কার্যক্রমে আইনি সেবা প্রদানে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি ২০০৩ সালে জাতীয় পর্যায়ে সেরা প্যানেল আইনজীবী হিসেবে ১ম স্থান অধিকার করেন। মাগুরা জেলার লিগ্যাল এইড কার্যক্রমে আইনি সেবা প্রদানে অবদানের জন্য তিনি ২০১৩, ২০১৬, ২০১৯, ২০২২ এবং ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট ০৫ (পাঁচ) বার মাগুরা জেলার শ্রেষ্ঠ প্যানেল আইনজীবী হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেন। এছাড়া, ২০১৫ সালে “জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ” কর্মসূচির শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরীতে তিনি \"সর্বশ্রেষ্ঠ জয়িতা” সম্মানে ভূষিত হন। তিনি প্যানেল আইনজীবী হিসেবে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনে যুক্ত থেকে আইনি সেবা প্রদান করেন। আইন পেশায় যুক্ত থাকার পাশাপাশি বর্তমানে তিনি সহকারী অধ্যাপক হিসেবে মাগুরা \'ল\' কলেজে কর্মরত আছেন। ০৪. বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ জহুর-ই-আলম, পিতা- মরহুম মুজিবর রহমান, মাতা- মরহুম কদভানু বেগম, গ্রাম শেখপাড়া, ইউনিয়ন- মঘী, উপজেলা- মাগুরা সদর, জেলা- মাগুরা। মুক্তিযুদ্ধকালীন তিনি ছিলেন একজন গেরিলা গ্রুপ কমান্ডার। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি মাগুরা জেলার বিনোদপুর, নহাটা, আলমখালী, নাকোলসহ বিভিন্ন স্থানে রাজাকার এবং পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ অংশগ্রহণ করেন। পেশাগত জীবনে তিনি প্রথমে শেখপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক হিসেবে এবং পরবর্তীতে খাদ্য বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তিনি মাগুরা সদর উপজেলায় ০২ (দুই) বার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবে নির্বাচিত হন। যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ জহর-ই-আলম সমাজের পিছিয়ে পড়া অসুস্থ ও প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য নিজ উদ্যোগে ২০ (বিশ) শতক জমি দানপূর্বক মাগুরা সদর উপজেলাধীন শেখপাড়া গ্রামে \"বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ জহুর-ই-আলম হাসিনা আলম অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়” প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, মাগুরা জেলা শাখার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ০৫. জনাব লিপিকা ঘোষ, স্বামী নিশিকান্ত বিশ্বাস, গ্রাম- মৃগীডাঙ্গা, উপজেলা- মাগুরা সদর, জেলা- মাগুরা। পেশায় তিনি একজন গৃহিণী। তিনি তাঁর স্বামী জনাব নিশিকান্ত বিশ্বাস এর মাধ্যমে সর্বপ্রথম ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার সম্পর্কে জানার পর এ সার উৎপাদনে আগ্রহী হন। মাগুরা সদরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে ২০২৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখে তিনি কিছু পরিমাণ আর্থ-ওয়ার্ম (থাইল্যান্ডের) কেঁচো ক্রয় করে দশটি চাড়ি এবং গোবর নিয়ে সম্পূর্ণভাবে পরিবেশবান্ধব অর্গানিক ফসল উৎপাদনে সহায়ক ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন শুরু করেন। প্রথমদিকে তিনি এ সার নিজের জমিতে ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে, গ্রামের কৃষকদের কৃষি জমিতে ব্যবহারের জন্য বিনামূল্যে সরবরাহ করার মাধ্যমে কৃষি উৎপাদনে ভাল ফলাফল পান। বর্তমানে তিনি \"নিশুতি ভার্মি কম্পোস্ট এড ডেইরী ফার্ম\" নামে একটি এগ্রো ফার্ম স্থাপন করে উদ্যোক্তা হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে ভার্মি কম্পোস্ট চাষ শুরু করেছেন। ০৬. জনাব দিলারা বেগম, পিতা- মোঃ সৈয়দ আলী, মাতা- মনোয়ারা বেগম, গ্রাম- হাটবাড়িয়া, উপজেলা- শালিখা, জেলা- মাগুরা। তিনি একজন আত্মনির্ভরশীল নারী উদ্যোক্তা। নয় ভাই-বোনের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম পিতার পক্ষে সাংসারিক ব্যয় নির্বাহ কষ্টসাধ্য হওয়ায় অল্প বয়সে তাকে বিয়ে দেয়া হয়। বিবাহিত জীবনের শুরু থেকেই তিনি চেষ্টা করে গেছেন কিভাবে আত্মনির্ভরশীল হওয়া যায়। উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, শালিখা থেকে মৎস্য চাষে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে তিনি মৎস্য চাষ শুরু করেন। পাশাপাশি মুরগি ও গরু পালন করেন। করোনা অতিমারিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা \"এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না” এ স্লোগানে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি ০১ (এক) বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করে ব্যাপকভাবে লাভবান হন। বর্তমানে, তাঁর অধীনে ১৫ (পনেরো) জন লোক কর্মরত আছেন। পাশাপাশি তিনি একজন ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেও কাজ করে যাচ্ছেন। ০৭. জনাব কাজী আল আমিন, পিতা- মোঃ লিয়াকত কাজী, মাতা- মোছাঃ হাজেরা বেগম, গ্রাম- চরজোকা, উপজেলা- শ্রীপুর, জেলা- মাগুরা। পেশায় তিনি একজন উদ্যোক্তা। দীর্ঘদিন বেকার অবস্থায় দিন অতিবাহিত করার পর তিনি ২০১৫ সালে উপজেলা যুব উন্নয়ন কার্যালয়, মহম্মদপুর থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে প্রাথমিকভাবে ৪০০০ (চার হাজার) কোয়েল পাখির বাচ্চা নিয়ে খামার শুরু করেন। পাশাপাশি ২ (দুই) একর জমি লীজ নিয়ে সবজি আবাদ করেন। কোয়েল পাখির খামার ও সবজি চাষ থেকে প্রাপ্ত মুনাফা দিয়ে তিনি ব্রয়লার খামারের কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি গবাদি পশু পালন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে ব্রয়লার খামারের পাশাপাশি গবাদি পশু মোটাতাজাকরণ কার্যক্রম শুরু করেন। মৎস্য, সবজি বাগান, ব্রয়লার এবং গরুর খামারের উপার্জন বাবদ ২০২২ সালে তিনি ১৭ (সতেরো) লক্ষ টাকা মুনাফা অর্জন করেন। বর্তমানে তাঁর অধীনে ২৫ (পঁচিশ) জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন এবং আরো অনেকে খণ্ডকালীন ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছেন। ০৮. মাগুরা আদর্শ বিতর্ক সংঘ (Magura Ideal Debating Sangha) মাগুরা জেলার শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিতর্ক চর্চার মাধ্যমে তাদের মেধা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। সংগঠনটি ১০ এপ্রিল ২০১৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে অদ্যাবধি ২২৬ (দুইশত ছাব্বিশ) টি সাপ্তাহিক বিতর্ক সেশন পরিচালনা, ১৬০ (একশত ষাট) টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিতর্ক ও উপস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন এবং ০৪ (চার) টি জেলা বিতর্ক উৎসব আয়োজনসহ জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শতাধিক বিতর্ক অনুষ্ঠান সফলভাবে আয়োজন করেছে। সংগঠনটি \'জাতীয় বিতর্ক উৎসব ২০২৩\' এ শ্রেষ্ঠ সংগঠনের স্বীকৃতি এবং খুলনা \'বিভাগীয় বিতর্ক উৎসব ২০২৩\' এ \'বিতর্কের নিয়মিত কার্যক্রম\' ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ সংগঠন হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে। ০৯. জনাব মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস, পিতা- প্রবীত বিশ্বাস, মাতা- বীনা রানী, গ্রাম- চেঙ্গারডাঙা, উপজেলা- মাগুরা সদর, জেলা- মাগুরা। পেশায় তিনি একজন পুলিশ সার্জেন্ট। তিনি সরকারি বাংলা কলেজ, ঢাকা হতে স্নাতক এবং ঢাকা কলেজ, ঢাকা হতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ২০১৯ সালে \"আইজিপি ব্যাজ\" পদকসহ চাকুরী জীবনে ৫১ (একান্ন) টির বেশি পুরস্কার/স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। তিনি মাগুরার প্রকৃতি, পরিবেশ এবং বন্যপ্রাণী রক্ষায় \'বিহঙ্গ বিলাস\' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে তোলেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক \'গণ বিজ্ঞপ্তি\' জারির মাধ্যমে দক্ষিণ মাগুরার ঐতিহ্যবাহী \'বিল বুরাইল\' কে পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা প্রদান করেন। তিনি চুয়াডাঙ্গায় পুলিশের ৩৯ (উনচল্লিশ) টি স্থাপনায় পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থলের জন্য মাটির হাঁড়ি, বাঁশ দিয়ে পাঁচ হাজারের অধিক পাখির বাসা তৈরি করে দেন। জনপ্রিয় টেলিভিশন প্রোগ্রাম \'ইত্যাদি\' তে \"ভালোবেসে পাখিদের হৃদয় জয় করেছেন মৃত্যুঞ্জয়” শিরোনামে তার কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। ১০. জনাব সৈয়দ বারিক আনজাম (বারকি), পিতা- সৈয়দ আবু জাহিদ, মাতা- মোছা: সোনিয়া জাহিদ, গ্রাম- ইসলামপুর পাড়া, উপজেলা- মাগুরা সদর, জেলা- মাগুরা। পেশায় তিনি একজন ফুটবল কোচ। তিনি ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বি.কে.এস.পি) তে ফুটবলার হিসেবে ভর্তি হন এবং ১৯৯২ সাল পর্যন্ত (বি.কে.এস.পি) তে ছাত্র হিসেবে অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হতে বি.এস.সি এবং এম.এস.সি সম্পন্ন করেন। তিনি (বি.কে.এস.পি) ঢাকা লীগে, ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে এবং মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খুলনা প্রথম বিভাগ লীগে অংশগ্রহণ করেন। বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম কে মাঠমুখী করার জন্য \"সুস্থ দেহ সুস্থ মন\" স্লোগান নিয়ে তিনি ২০০৮ সালে \"ইয়াং স্টার একাডেমী” প্রতিষ্ঠা করেন। এর মাধ্যমে তিনি বয়সভিত্তিক খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ প্রদান, সুস্থ ক্রীড়া চর্চা, বিভিন্ন মাঠে টুর্নামেন্ট আয়োজন করে খেলোয়াড়দের মাঠে রাখা, ইত্যাদি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি ২০০৫-০৭ সালে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে আজকের কাগজ পত্রিকাতে কাজ করেন। বর্তমানে তিনি মাগুরা সদর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন। মাগুরা জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের খেলার মাঠগুলোতে ঘুরে ঘুরে তিনি পারিশ্রমিকবিহীন প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন। ১১. জনাব অনিল হাজারিকা, পিতা- হাজারিলাল বিশ্বাস, মাতা- যশোদা বিশ্বাস, গ্রাম- তিলখড়ি, উপজেলা- শালিখা, জেলা- মাগুরা। তিনি দক্ষিণ বঙ্গের একজন জনপ্রিয় লোকসংগীত শিল্পী। তাঁর পিতাও একজন লোকসংগীত শিল্পী ছিলেন। পিতার কাছ থেকে তাঁর সংগীতের প্রথম হাতেখড়ি। পরবর্তীতে বেশ কয়েকজন সংগীত গুরুর কাছে তিনি সংগীত বিষয়ে তালিম নেন। তিনি স্বভাব কবি হিসেবেও জনপ্রিয়। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ১২০০ (বারোশত) গান রচনা করেছেন। ১৯৮৫ সালে তিনি খুলনা বেতারের নিয়মিত শিল্পী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন। তাঁর জনপ্রিয় কিছু আঞ্চলিক গানের মধ্যে: \'আম গাছে ডিলা মারে কিডারে\', \'ঠিলে ধুয়ে দে বউ গাছ কাটতি যাব\', \'দৈনিক হাটবারে দাদী, কাঁঠাল আনতে কয়\', \'আমাগের উনি গেছে কনে\' ইত্যাদি অন্যতম। তিনি মাগুরা শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক \'গুনীজন সম্মাননা-২০১৪\' এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃক \'গুনীজন সম্মাননা-২০১৬\' ভূষিত হন।