গত দশটি বছরে আমরা হারিয়েছি আমাদের সাহিত্যের জগতের অনেক কীর্তিমানকে। করোনায় হারিয়েছি আরও অনেককে। বইমেলায় আনিসুজ্জামান, সৈয়দ শামসুল হক, হাসান আজিজুল হক, দ্বিজেন শর্মা, হুমায়ূন আহমেদের মতো লেখকদের নতুন কোনো বই নেই। মুক্তা বা খনির মতো দুর্লভ কোনো পাণ্ডুলিপি খুঁজে পাওয়া না গেলে তাদের কোনো নতুন বই আর প্রকাশ হবে না। নতুন বই না থাকলেও মেলায় তাদের উপস্থিতি আছে। নানাভাবে বাংলা সাহিত্যের সাম্প্রতিককালে প্রয়াত এ সাহিত্যিকদের বই বা তাদের কথা নতুন আঙ্গিকে, নতুন সংকলনে, স্মৃতিকথনে উঠে এসেছে। দেশের কয়েকটি খ্যাতনামা প্রকাশনা অবসর, অন্যপ্রকাশ, কাকলী, সময়, অন্বেষা থেকে হুমায়ূন আহমেদের অসংখ্য উপন্যাস প্রকাশ হয়েছে। এই প্রকাশনাগুলো থেকে লেখকের প্রকাশিত এই বইগুলো একক বই বা সমগ্র আকারে পাওয়া যায়। পাঠকদের কাছে এখনো এই বইগুলোর চাহিদা বেশ। ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ থেকে এ বছর আট খণ্ডে হাসান আজিজুল হকের রচনাবলি প্রকাশ হয়েছে। ঐতিহ্য থেকে প্রকাশ হয়েছে সৈয়দ শামসুল হক রচনাবলি। সব্যসাচী এ লেখকের অনেক বই বিভিন্ন প্রকাশনায় পাওয়া যাচ্ছে। একইভাবে প্রথমা, চন্দ্রাবতী, অন্যপ্রকাশসহ বেশ কিছু প্রকাশনীতে আছে জাতির বাতিঘর ড. আনিসুজ্জামানের উল্লেখযোগ্য সব বই। এসব বইয়ের কদর পাঠকের কাছে এখনো আছে। পাঁচ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে শোকজ : বইমেলায় টাস্কফোর্সের অভিযানের পর পাঁচ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করেছে অমর একুশে বইমেলা পরিচালনা কমিটি। একাধিক বইয়ে একই আইএসবিএন নম্বর থাকা, অনুবাদে মূল লেখক আর প্রকাশকের অনুমতিপত্র না থাকার নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগে তাদের শোকজ করা হয়। আগামী তিন দিনের মধ্যে তাদের শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। শোকজপ্রাপ্ত পাঁচ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান হলো-বাতিঘর প্রকাশনী, বঙ্গজ প্রকাশন, গাজী প্রকাশন, কুঁড়েঘর প্রকাশনী, তৃপ্তী প্রকাশ কুঠির। বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ডা. কেএম মুজাহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, বিভিন্নরকম অনিয়ম আর নীতিমালা ভঙ্গের কারণে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করা হয়েছে। নতুন বই : মঙ্গলবার নতুন এসেছে ১০৮টি। প্রকাশিত নতুন বইয়ের মধ্যে ঐতিহ্য থেকে বদিউর রহমানের সংকলন, সম্পাদনা ও টীকাভাষ্য রবীন্দ্ররচনায় বিজ্ঞান, একই প্রকাশনী থেকে জিনান সৈয়দের লেখা ‘আমার আব্বু আবদুল মান্নান সৈয়দ’, অবসর থেকে শিফারুল শেখ রচিত ‘ফিলিস্তিন এই গণহত্যার শেষ কোথায়’, একই প্রকাশনী থেকে অরিত্র আহমেদের অনুবাদে ইয়োন ফসেসে’র ‘আর তারপর আমার কুকুর ফিরে আসবে আমার কাছে।’ বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ : মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জফির সেতু। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শাহিদা খাতুন এবং সৌমিত্র শেখর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আবদুল খালেক। আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন প্রাবন্ধিক খান মাহবুব, শিশুসাহিত্যিক শেলী সেনগুপ্তা, গবেষক নিগার চৌধুরী এবং কবি আহমেদ শিপলু। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি সাজ্জাদ আরেফিন, ফারহান ইশরাক এবং সৌম্য সালেক। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, ঝর্ণা সরকার এবং মো. কামাল হোসেন। দলগত আবৃত্তি পরিবেশন করেন জাহাঙ্গীর চৌধুরীর পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন ‘উদ্ভাস আবৃত্তি সংগঠন’। এছাড়া ছিল কাঙাল মজিবরের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কাঙাল হরিনাথ সাংস্কৃতিক সংগঠন’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী নারায়ণ চন্দ্র শীল, বিমল বিশ্বাস, সাধিকা সৃজনী তানিয়া, শান্তা সরকার, শ্যামল কুমার পাল, আজমা সুরাইয়া শিল্পী এবং শারমিন সুলতানা।