তরুণদের সেনাবাহিনীতে ভেড়াতে যে কৌশল নিচ্ছে জাপান

প্রকাশিতঃ ফেব্রুয়ারী ২০, ২০২৪ | ৫:১৬ অপরাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

সামরিক বাহিনীতে তরুণ-তরুণীদের যোগদানে আকৃষ্ট করতে এবার নতুন কৌশল নিচ্ছে জাপান। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীতে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের লম্বা চুল রাখার অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। প্রসঙ্গত, চীন ও উত্তর কোরিয়া নিয়ে বাড়তে থাকা উদ্বেগের মুখে জাপান যখন সৈনিকের ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে হিমশিম খাচ্ছে তখনই এমন ঘোষণা দিল দেশটি। জাপানের সামরিক বাহিনীতে এতদিন পুরুষদের বাজ কাট এবং নারীদের ছোট চুল রাখার নিয়ম ছিল। তবে এবার এপ্রিল থেকে চুল ছোট রাখার এ নিয়ম শিথিল করা হবে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, পুরুষ সেনারা পিঠ ও পাশ ছোট করে ওপরে লম্বা চুল রাখতে পারবেন। নারীদেরকেও লম্বা চুল রাখার অনুমতি দেওয়া হবে, তবে তাদের ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে– ইউনিফর্ম পরা অবস্থায় বেঁধে রাখা চুল কাঁধের ওপর পড়তে পারবে না এবং হেলমেট পরার ক্ষেত্রেও যাতে তা অসুবিধা সৃষ্টি না করে। জাপানের কিয়োদো সংবাদ সংস্থার মতে, চুল কাটা শিথিল করার খবরটি জানুয়ারিতে জাপানের আত্মরক্ষা বাহিনীর (জেএসডিএফ) একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেলের বৈঠকে প্রথম জানানো হয়েছিল। বৈঠকে আত্মরক্ষা বাহিনীতে সেনাসদস্য বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। প্রতিরক্ষামন্ত্রী মিনোরু কিহারা বৈঠকের সময় বলেন, আমাদের দেশ যেহেতু কর্মক্ষেত্রে মারাত্মক কর্মী ঘাটতির সম্মুখীন হচ্ছে, তাই আমাদের প্রতিভা সুরক্ষিত করার জন্য বেসরকারি খাতসহ অন্যদের সঙ্গেও প্রতিযোগিতা তীব্রতর হচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে জাপানের সামরিক বাহিনী কেবল প্রতিরক্ষামূলক ভূমিকাই পালন করে আসছে; যা দেশটির শান্তিবাদী সংবিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। সাম্প্রতিক সময়ে চীনের দ্রুত সামরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক কর্মসূচির হুমকি মোকাবিলায় জাপান সেনা নিয়োগ বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বছর জাপান ঘোষণা করেছিল, তারা আগামী পাঁচ বছরে প্রতিরক্ষা ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বাড়াবে। তবে জেএসডিএফ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের সেনাবাহিনী জনবলের অভাবে সক্ষমতার চেয়ে ১০ শতাংশ কম কাজ করছে। জাপান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জন্মহার কমে যাওয়া এবং বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জনগোষ্ঠী থাকার পাশাপাশি নিম্ন মজুরি ও যৌন হয়রানির অভিযোগের কারণে সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে মানুষ আগ্রহী হচ্ছে না। গত বছর খবর পাওয়া গিয়েছিল যে, জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ট্যাটু আঁকা ব্যক্তিদেরকেও জেএসডিএফ- এ যোগদানের অনুমতি দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে। ইয়াকুজা সংগঠিত অপরাধ চক্রে জড়িত অনেকের গায়েই ট্যাটু থাকায় জাপানে দীর্ঘদিন ধরে ট্যাটু নিষিদ্ধ ছিল। কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে, ট্যাটু আঁকা আছে এমন অনেক মানুষই অপরাধ চক্রে জড়িত নয়। আর ট্যাটু নিষিদ্ধ থাকাটা সেনাবাহিনীতেও নিয়োগের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করেছে।