আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস উপলক্ষে একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় অমর একুশের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি…’ বাজানো হয়। এর আগে রাত ১১টা ৫১ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শহীদ মিনারে এসে পৌঁছলে তাকে অভ্যর্থনা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। রাত ১১টা ৫৩ মিনিটে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মিনার অঙ্গনে উপস্থিত হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ঢাবি উপাচার্য তাকে অভ্যর্থনা জানান। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পরে মন্ত্রিসভার সদস্য ও দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দলের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু। তাদের পর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের বিচারপতিরা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন৷ পরে তিন বাহিনীর প্রধানেরা, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ওই এলাকা ত্যাগ করলে সর্বস্তরের জনগণের জন্য শহীদ মিনার খুলে দেওয়া হয়। এরপর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। কালো ব্যাজ, কালো পতাকা ও ব্যানার নিয়ে পলাশী হয়ে জগন্নাথ হলের সামনে দিয়ে সবাই ধীরপায়ে এগিয়ে চলেছেন শহীদ মিনারের দিকে। অনেকের পোশাক ও সজ্জাতেও রয়েছে শোকের কালো রং। কণ্ঠে আছে সেই বেদনাবিধুর গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি…’। এবার মহান শহীদ দিবসের ৭২তম বছর পূর্ণ হচ্ছে। মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ করা বাংলা মায়ের সাহসী সন্তানদের অনন্য আত্মত্যাগের এই দিনকে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়। তারপর থেকে সারা বিশ্বেই নিজ নিৃজ মাতৃভাষা নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির ভেতর দিয়ে দিনটি পালিত হচ্ছে।