বান্দরবানের থানচি উপজেলায় ভ্রমণকারী পর্যটকদের কাছ থেকে নগদ টাকা এবং ১৭টি মোবাইলসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে সশস্ত্র বাহিনী। ছিনতাইকারীদের হাতে ৬টি অস্ত্র এবং জলপাই রঙের পোশাকে কেএনএফ লেখা ছিল বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পর্যটকরা। রোববার রাতে দুর্গম পর্যটন স্পট ভেলাখুম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পর্যটকরা জানান, থানচি উপজেলার তীন্দু ইউনিয়নের নাফাখুম পর্যটন স্পটে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভ্রমণে যান ২২ জনের দুটি পর্যটক গ্রুপ। যাদের মধ্যে ৪ জন নারী ছিলেন। নাফাকুম ভ্রমণ শেষে ২৫ ফেব্রুয়ারি গ্রুপগুলো দর্শনীয় স্থান ভেলাখুম ট্যুরিস্ট স্পটে ক্যাম্পিং করে। ওই দিন রাতে ১১টার দিকে ৬ জনের একটি সশস্ত্র বাহিনীর সন্ত্রাসী দল তাদের ক্যাম্পে হানা দেয়। এ সময় পর্যটকদের সারিবদ্ধভাবে এক জায়গায় বসিয়ে রেখে তাদের কাছ ১ লাখ ৮১ হাজার টাকা এবং ১৭টি মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয় সশস্ত্র বাহিনী। ভুক্তভোগী পর্যটক গ্রুপের সদস্য অনিক মোদক বলেন, বান্দরবান ভ্রমণে এসে ভয়ঙ্কর অ্যাডভেঞ্চারের মুখোমুখি হলাম আমরা ২২ জন পর্যটক। প্রথম দিনে নাফাখুম ঘুরে টুইসাপাড়া হয়ে আমরা ভেলাখুমে রাতযাপন করি। রাতে ৬টি অস্ত্র এবং জলপাই রঙের পরনের পোশাকে কেএনএফ লেখা একটি সশস্ত্র ডাকাতদল আমাদের জিম্মি করে জিনিসপত্র লুটে নেন। তবে আমাদের কারো কোনো ক্ষতি করেনি। শুধুমাত্র স্থানীয় গাইডকে মারধর করে সশস্ত্র বাহিনী। কোনোরকম রাত পেরিয়ে আমরা সাঁতরে ভেলাখুম পার হয়ে থানচিতে চলে আসি দ্রুত। বিষয়টি আমরা স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্প এবং প্রশাসনকে অবহিত করেছি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে থানচি উপজেলা ট্যুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ এসআই আনোয়ার হোসেন জানান, ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা ২২ জন পর্যটকের দুটি গ্রুপ রেমাক্রী ভ্রমণে যান। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে তারা রেমাক্রী পর্যন্ত ভ্রমণের অনুমতি নিলেও পরবর্তীতে নাফাকুম, টুইসাপাড়া হয়ে ভেলাখুম পর্যটন স্পটে ঘুরতে যান। সেখানেই ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে কাজ করছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করে থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন জানান, থানচিতে পর্যটকদের ছিনতাইয়ের ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ইতোপূর্বে কখনো এমন ঘটনা ঘটেনি। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। ভুক্তভোগী পর্যটকরা কার্যালয়ে এসে জানালে তাদের থানা পুলিশের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন জানান, ভুক্তভোগী পর্যটকদের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।