প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে আকুতি জানালেন সেই বৃষ্টির মা

প্রকাশিতঃ মার্চ ৩, ২০২৪ | ৬:০৫ অপরাহ্ন
জাহাঙ্গীর আলম রানা, খোকসা উপজেলা প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া

গত বৃহস্পতিবার বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে নিহত সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুনের মা বিউটি বেগম প্রধানমন্ত্রীর কাছে তার মেয়ের মরদেহ দাবি করেছেন। শনিবার কুষ্টিয়ার খোকসার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নে এর বনগ্রাম পশ্চিমপাড়া বৃষ্টির বাড়িতে শোকের মাতম দেখা যায়। বৃষ্টির দুই বোন, মা ও এলাকাবাসী বৃষ্টির মরদেহের প্রতীক্ষায় রয়েছেন তীর্থের কাকের মতো। এদিকে ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া মরদেহ হস্তান্তর না হওয়ার সংবাদ শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বৃষ্টির মা ও বোন। বৃষ্টির মা বিউটি বেগম বলেন, বৃষ্টিকে আমি গর্ভে ধারণ করেছি। বৃষ্টি, ঝর্ণা ও বর্ষা তিনজনই আমার সন্তান। পরে তার মা বৃষ্টির জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন, প্রবেশপত্র বের করে সামনে দিলে দেখা যায়, প্রতিটিতে বৃষ্টি খাতুন, পিতা সবুজ শেখ ও মাতা বিউটি বেগম লেখা আছে। বৃষ্টি খাতুনের ৭ম শ্রেণিতে পড়াকালে তার নিজহাতে ডায়েরিতে লেখা জীবনবৃত্তান্তে উল্লেখ রয়েছে সেটি বের করে দেখান তার মা। তার মা জানান, মোবাইলে বৃষ্টির সঙ্গে তার শেষ কথা হয় ২৯ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে। বৃষ্টি জানায় মিটিং শেষ করেছে এবং তার আরও কিছু কাজ বাকি আছে, বাসায় ফিরে কথা বলবেন। এর পর তার ফোন আর আসেনি। পরের দিন তার ননদের ছেলে রেজোয়ান মোবাইল ফোনে বৃষ্টির খোঁজ নিতে বলে এবং তিনি খোঁজ নিয়ে বৃষ্টির মৃত্যুর খবর পান। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বৃষ্টির মরদেহ দাবি করেন। জানা যায়, ফেসবুক প্রোফাইল ও সাংবাদিকতায় অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামধারী অনলাইন পোর্টাল দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের সাবেক সাংবাদিক ঢাকা বেইলি রোডে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর পর লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় পরিচয়সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়। তার বাবা সবুজ শেখ মেয়ের মরদেহ গ্রহণ করতে গেলে ঢাকার রমনা কালীমন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা অভিশ্রুতি শাস্ত্রীকে হিন্দু দাবি করেন এবং মরদেহ তার মুসলিম বাবার কাছে প্রদানে বাধা সৃষ্টি করেন। ঢাকার রমনা কালীমন্দিরের সভাপতি জানান, অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ৮ থেকে ৯ মাস ধরে মন্দিরে যাতায়াত করতেন, পূজা করতেন। সে সূত্রেই তার সঙ্গে পরিচয়। অভিশ্রুতি শাস্ত্রী জানিয়েছিলেন, তার মা-বাবা বেনারসে থাকতেন। তারা মারা যাওয়ায় দাদুর হাত ধরে ঘটনাচক্রে তিনি কুষ্টিয়ায় এসেছিলেন ছোটবেলায়। অভিশ্রুতির দাদু মারা গেলে একটি পরিবার তাকে দত্তক নিয়েছিল। তবে এ পরিবার মুসলিম না হিন্দু ছিল, তা তিনি বলেননি। তাই অধিকতর তদন্ত করে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর আসল পরিচয় সামনে আনা জরুরি। ঢাকার রমনা কালীমন্দিরের সভাপতির পক্ষ থেকে রমনা থানার ওসি এবং জেলা প্রশাসক বরাবর অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর পরিচয় নিয়ে যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে— এমন কথা জানিয়ে তা সমাধানে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষার পর মরদেহ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা যায়।