মুন্সীগঞ্জ শহরে জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের মারধরে মোহাম্মদ উজ্জ্বল মোল্লা নামে এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার ( ৪ ফেব্রুয়ারী) রাত ১১ টার দিকে শহরের মাঠাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে দাবি নিহতের স্বজনদের।এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শহরের ডিস লাইন ব্যবসায়ী হুমায়ূন হোসেন ও তার ভাই মোহাম্মদ সোহেলকে আটক করেছে পুলিশ।নিহত উজ্জ্বল মোল্লা(৪২) মাঠপাড়া এলাকার শাহজাহান মোল্লার ছেলে। উজ্জল মুন্সীগঞ্জ পৌরসভায় তৃতীয় শ্রেণির কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি মুন্সীগঞ্জ শহর ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ছিলেন।স্বজন ও স্থানীরা জানায়, দুই বছর ধরে উজ্জলদের সঙ্গে তার আত্মীয় সেলিনা-রুবিনা বেগমদের সঙ্গে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। কয়েক মাস আগে বিরোধ পূর্ণ সেই জমির পাওয়ার নেন শহরের দক্ষিণ কোটগাঁও এলাকার ডিস ব্যবসায়ী হুমায়ুন।পাওয়ার নেওয়ার পর থেকে উজ্জলদের কাছ থেকে জোর করে জায়গা দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছিলো হুমায়ুন। তার জের ধরে সোমবার রাত ১১ টার দিকে হুমায়ুন ও তার ছোট ভাই সোহেলের নেতৃত্বে ১০-১২ জন উজ্জ্বলের মাঠা পাড়ার বসত বাড়িতে হামলা চালায়। উজ্জল তাদের বাঁধা দিতে গেলে হুমায়ুন,সোহেল ও তাঁদের লোকজন উজ্জ্বলকে কিল,ঘুষি,লাথিসহ বেধড়ক মারধর করে। এ সময় উজ্জলকে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায় অভিযুক্তরা।পরে স্থানীয়রা উজ্জ্বলকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. ফেরদৌস হাসান জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ওই ব্যক্তি মারা যান। নিহতের শরীরে দৃশ্যমান আঘাতের কোন চিহ্ন নেই বলেও জানান তিনি। নিহতের ভাই রাজু মোল্লা বলেন,জমির বিরোধ নিয়ে অসংখ্যবার পৌরসভায় বসা হয়।শেষ পর্যন্ত ভূমি অফিস পর্যন্তও গড়িয়েছে। আমরা বলেছি আইন যা রায় দেয় তাই মেনে নেবো। হুমায়ুনরা আইনকে তোয়াক্কা করছিলনা। তারা তাদের শক্তি দিয়ে সম্পদ দখল করতে যায়। বাড়িতে ফাঁকা গুলি করে। আমাকে ও আমার ভাইকে বেদম মারধর করে। মার সয্য করতে না পেরে উজ্জল শেষ পর্যন্ত মারা যায়।নিহত উজ্জলের আহাদ(৮) এবং আরাফ নামে ৬ মাসের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে।স্বামী হারিয়ে বারবার কেঁদে যাচ্ছেন স্ত্রী রুবিনা আক্তার।রুবিনা আক্তার বলেন,হুমায়ূনরা জায়গা দখল করতে গিয়ে আমার স্বামীকে মারতে মারতে মেরেই ফেলল।সামন্য জায়গার জন্য মানুষ কতটা নির্মম হয়।আমি আমার দুটো ছোট বাচ্চা নিয়ে কোথায় যাবো,আমাদেরকে দেখবে! আমরা উজ্জল হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।ঘটনার পর পর অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত হুমায়ুন ও তার ভাই সোহেলকে আটক করেছে মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল থান্দার খায়রুল হাসানসহ পুলিশের একটি দল।এএসপি খায়রুল হাসান জানান, লাশ ময়না তদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। কিল,ঘুষি দিলে যেমন হয়,মৃতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে তেমন রক্ত জমাটের চিহ্ন রয়েছে।তবে কি কারনে মারা গেছে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত ঘটনা নিশ্চিত হওয়া যাবে।