জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণভাবে নির্মূলের মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবব্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বলার অপেক্ষা রাখে না দুর্নীতি দেশের অন্যতম বড় সমস্যা। এর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াই আজ জরুরি। সন্ত্রাস ও সহিংসতা দেশে একটা বড় ব্যাধি। এর বিরুদ্ধেও দলমতনির্বিশেষে সবাইকে এক হয়ে সংগ্রামে শামিল হতে হবে। তা না হলে দেশ থেকে এগুলো দূর করা যাবে না। বুধবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বেগম রওশন এরশাদ এসব কথা বলেন। বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, করোনা পরিস্থিতির পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে যেসব কথা বলেছেন, তা আমাদের জন্য খুবই প্রাসঙ্গিক। এগুলো আমাদের জন্যই নয়, সারা বিশ্বের জন্যও প্রাসঙ্গিক। এগুলোকে মোকাবিলা করতে আমাদের সতর্কভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। বিদ্যুৎ সংকটের কথা উলেখ করে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সব মহলের আপত্তির পরও সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। এতে সবকিছুর খরচ বাড়বে। ফলে আরেক দফা বাড়বে দ্রব্যমূল্য। ক্ষতিগ্রস্ত হবে রপ্তানি খাত। এ সময় গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম অপরিবর্তিত রাখা উচিত ছিল। আমি আশা করব, বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে সরকার। বেগম রওশন এরশাদ বলেন, প্রবৃদ্ধি ৭.৫২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সামগ্রিক অর্থনৈতিক বিবেচনায় ইতিবাচক। মাথাপিছু জাতীয় আয় পূর্ববর্তী অর্থবছর থেকে ২৩৩ মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পেয়ে ২৮২৪ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু অর্থনৈতিক উন্নয়নে জিডিপি কতটা কার্যকর, তা নিয়ে ইদানীং প্রশ্ন উঠেছে। শুধু জিডিপি-প্রবৃদ্ধি বাড়লেই দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইবে, তা বলা যাবে না। সাধারণ মানুষের জীবনমানে কতটুকু উন্নতি হয়েছে, তা দেখতে হবে। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধি বিতর্কে না গিয়ে সরকারের উচিত হবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানের দিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া। তাহলে বৈষম্য কমবে, সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। দেশের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-আয়ের মানুষকে রক্ষা করতে হলে এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে কৃষক ন্যায্য মূল্য পায়, ভোক্তারাও সহনীয় দামে খাদ্যশস্য কিনতে পারে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে খদ্যশস্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে সরকারকে।