পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা আসছে রমজান মাসে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে অনুশীলন করবেন। মূলত ফিটনেস বাড়াতেই এই সেনা প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। পাকিস্তান আর্মির সঙ্গে আগামী ২৫ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনের এ ট্রেনিং ক্যাম্প করবেন দেশটির ক্রিকেটাররা। পিসিবি সভাপতি মহসিন নাকভি রাজধানী ইসলামাবাদের একটি হোটেলে এমন তথ্য জানিয়েছেন বলে খবর দিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম। মহসিন নাকভি জানান, ক্রিকেটারদের ফিটনেস কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পিএসএল (পাকিস্তান সুপার লিগ) শেষ করেই এই ট্রেনিংয়ে যোগ দেবেন ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটাদের অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, লাহোরে যখন ম্যাচ দেখলাম আমি একটি ছক্কাও দেখিনি যেটি স্ট্যান্ডে গিয়ে পড়েছে। যখনই আমি এমন কোনো ছক্কা দেখেছি আমার মনে হতো কোনো বিদেশি ক্রিকেটার যেন এটা মেরেছে। আমি বোর্ডকে বলেছি, এমন পরিকল্পনা করতে যেন ক্রিকেটারদের ফিটনেস সঠিক পর্যায়ে থাকে। সবাইকে এর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। পিসিবি সভাপতি আরও বলেন, আমাদের সামনে নিউজিল্যান্ড সিরিজ আছে, এরপর আয়ারল্যান্ড, এরপর ইংল্যান্ড এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। আমি ভাবছিলাম, আমরা কখন ট্রেনিং করব? সময় তো নেই। যাই হোক, আমরা একটি উইন্ডো (সুযোগ) খুঁজে পেয়েছি। কাকুলে মিলিটারি একাডেমিতে আগামী ২৫ মার্চ থেকে ৮ এপ্রিল আমরা ট্রেনিংয়ের আয়োজন করব। সেখানে পাকিস্তান আর্মি ট্রেনিংয়ে থাকবে; আশা করা যাচ্ছে তারা তোমাদের (ক্রিকেটারদের) সাহায্য করবে। ক্রিকেটারদের পাকিস্তান ক্রিকেটকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কথাও জোর দিয়ে বলেছেন মহসিন। তিনি বলেন, আমি বলছি না যে তোমরা একদমই টাকা উপার্জন করো না অথবা এমন কোনো আত্মত্যাগ করো যা আমরা করার জন্য প্রস্তুত নই। তবে আমি একটি উদাহরণ দিচ্ছি। এক বছর আগে আমাকে পাঞ্জাবের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল এবং এর ফলে আমার ব্যবসায় অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়। আমাকে সেটা এক পাশে রেখে চালিয়ে যেতে হয়েছে। আমার ইচ্ছা ছিল পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করার; যে কারণে আমি এই আত্মত্যাগ করতে পেরেছি। মহসিন জানান, আমি তোমাদের শতভাগ সমর্থন দিব; কিন্তু আমি বলব পাকিস্তানকে তোমাদের প্রথম পছন্দে রাখতে এবং টি-টোয়েন্টি লিগকে দ্বিতীয় পছন্দে রাখতে। বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক যখন টাকা দেশের চেয়েও বড় হয়ে যায়। যদি তোমরা এটি করো তাহলে হয়তো সমস্যা হতে পারে। আমরা কেন্দ্রীয় চুক্তির বিষয়টি আরও শক্তিশালী করতে পারি যদি তোমরা চাও, কিন্তু তোমাদের পাকিস্তানের হয়ে খেলার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। মিলিটারি ট্রেনিংয়ের তত্ত্ব প্রয়োগ করে অবশ্য এর আগেও সাফল্য মিলেছিল পাকিস্তানের ক্রিকেটে। মিসবাহ-উল-হকের অধীনে থাকার সময়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে কাকুলে মিলিটারি একাডেমিতে ট্রেনিং ক্যাম্প করেছিলেন পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা। সেই সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টেই দারুণ এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন মিসবাহ। ১০টি পুশ আপের সাথে একটি মিলিটারি স্যালুট দিয়ে সেঞ্চুরির উদযাপন করেছিলেন মিসবাহ। সেই সিরিজটা ২-২ ব্যবধানে ড্র করেছিল পাকিস্তান। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টেস্ট র্যাংকিংয়ের শীর্ষেও উঠেছিল সেবারই।