সমান সুযোগ নিয়ে নানা অভিযোগ প্রার্থীদের

প্রকাশিতঃ মার্চ ৯, ২০২৪ | ৭:৫৪ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

নানা আশঙ্কার মধ্যেই ময়মনসিংহ সিটিতে ভোটগ্রহণ আজ। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। সকাল ৮টায় শুরু হয়ে বিরতিহীন ভোটগ্রহণ চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচনে সবার সমান সুযোগ নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ। নানা আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন প্রার্থীরা। ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট দেওয়া নিয়ে চিন্তিত দুজন মেয়র প্রার্থীসহ অর্ধশতাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী। আর ভোটাররা জানিয়েছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য জনপ্রতিনিধিকে নির্বাচিত করতে পারেন তারা। তবে নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা জানান, নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে কাজ করছেন তারা। সেক্ষেত্রে কোনো ছাড় দিতে নারাজ ইসি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসাবেও দেখছেন তারা। শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও নির্বাচনসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। দুজন মেয়র ও কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থী বলেন, ‘তফশিল ঘোষণার পর থেকেই বারবার লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড তৈরির কথা বলা হলেও নির্বাচন কমিশন তা নিশ্চিত করতে পারেনি। প্রার্থীদের প্রচারে বাধা দেওয়া হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ইসি। প্রচারের শেষ দিনেও একজন মেয়র প্রার্থীর গণসংযোগে হামলা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই ভোট শনিবার। ভোটকেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়ার আশঙ্কা করছি আমরা।’ জানতে চাইলে অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা (ময়মনসিংহ) ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার শেখ মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড তৈরি নিয়ে কিছু অভিযোগ ছিল। সেগুলো নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এই নির্বাচনকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোথাও ছাড় দেওয়া হবে না। সব প্রার্থীকে আমরা সমান চোখে দেখছি।’ তিনি বলেন, ‘সব প্রার্থীর এজেন্ট যাতে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করতে পারেন, সেজন্য ইসি সতর্ক রয়েছে। কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রাইকিং ফোর্সে ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, বিজিবি, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।’ নগরীর আমলাপাড়ার বাসিন্দা সঞ্জয় চন্দ্র দে বলেন, ‘বিএনপি অংশ না নেওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে তেমন একটা আগ্রহ নেই। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মধ্যেই লড়াই হবে। তবে নগরীর উন্নয়নে আমরা যোগ্য ব্যক্তিকেই নির্বাচিত করব।’ কাচারি ঘাটের ব্যবসায়ী আওলাদ হোসেন বলেন, ‘গত কয়েক দিনে প্রার্থীরা ব্যাপক প্রচার চালিয়েছেন। শহরে ভোট নিয়ে জনগণের মধ্যে আগ্রহ আছে। মানুষ ভোট দিয়ে তাদের মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচিত করবেন।’ শুক্রবার ১২৮টি কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনসহ নির্বাচনি সরঞ্জাম পৌঁছে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত নগরীর সার্কিট হাউজসংলগ্ন জিনমেশিয়ামে অবস্থিত সাতটি বুথ থেকে সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়। রিটার্নিং অফিসার ও ময়মনসিংহ আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চৌধুরী জানান, শনিবার (আজ) সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে দেড়গুণ ইভিএম মেশিন থাকবে। এছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এতে স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি ৭ প্লাটুন বিজিবি, পুলিশ, আনসার সদস্য, র‌্যাবের ২০টি টিম ছাড়াও ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি আরও জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে চারজন পুলিশ ও ১২ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে পাঁচজন পুলিশ ও ১২ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এবার ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে বর্তমান মেয়রসহ চারজন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। আর একজন জাতীয় পার্টির। এছাড়া ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৯ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই সিটিতে মোট ভোটার তিন লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৬৩ হাজার ৮৩২ জন; মহিলা ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৫৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ৯ জন।