মেহেদির রঙ মুছে যাওয়ার আগেই স্বামী হারানোর শঙ্কায় ইয়ামনি

প্রকাশিতঃ মার্চ ১৩, ২০২৪ | ৮:৫২ অপরাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

মেহেদির রঙ মুছে যাওয়ার আগেই স্বামী হারানোর শঙ্কায় কাঁদছেন ইয়ামনি। ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের হাতে ছিনতাই হওয়া এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে রয়েছেন তার স্বামী আলী হোসেন। জাহাজের ওয়েলার হিসেবে চাকরি করেন তিনি। মাত্র ৮-৯ মাস আগে আলী হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় ইয়ামনির। তার বাড়ি পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলায়। আর নিখোঁজ আলী হোসেনের জন্ম ও বেড়ে ওঠা বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বাইশারী গ্রামে। জলদস্যুদের হাতে আলী হোসেন অপহৃত হওয়ার পর তার বাড়ি গেলে চোখে পড়ে শঙ্কা কান্না আর সবার চোখে মুখে ভয়ের ছাপ। আলী হোসেনের পরিবারের সবাই ভীষণ উদ্বিগ্ন। তার বাবা ইমাম হোসেন মল্লিক জানান, ছেলের সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়েছে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। এর আগে বিকাল ৩টার দিকে ফোন দিয়ে সে জানায় তাদের জাহাজ জলদস্যুদের কবলে পড়ার ঘটনা। সর্বশেষ সন্ধ্যায় ফোন দিয়ে জানায় তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সোমালিয়ার দিকে। আরও জানায়- এখন থেকে যোগাযোগের সবকিছু মানে মোবাইলসহ জাহাজ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে জলদস্যুরা। ফলে মুক্তি পাওয়া কিংবা বেঁচে না ফেরা পর্যন্ত আর কথা হবে না পরিবারের কারও সঙ্গে। বাইশারীর কুমাড়ের পাড় বিশারীকান্দি সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করার পর নারায়ণগঞ্জের মেরিন একাডেমিতে চার বছরের কোর্স সম্পন্ন করেন আলী হোসেন। এরপর সে চাকরি নেন জাহাজে। যে জাহাজটি ছিনতাই হয়েছে ওই কোম্পানিতেই ছিল আলীর প্রথম চাকরি। এর আগেও দুবার জাহাজে চেপে বিদেশে গিয়েছিলেন আলী হোসেন। এটা ছিল তার তৃতীয়বারের সমুদ্রযাত্রা। দুই ভাইয়ের মধ্যে পরিবারের ছোট ছেলে আলী হোসেনের আরেক ভাই জুলফিকার চাকরি করেন পল্লীবিদ্যুতে। দুই ভাই বাবা, মা, ভাবি আর স্ত্রীকে নিয়েই আলীর সংসার। আলী হোসেনের বাবা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শেষবারের মতো কথা হওয়ার পর বহু চেষ্টা করেও আলীর মোবাইলে আর কল প্রবেশ করেনি। ফলে ছেলের সঙ্গে কথাও বলতে পারেননি তিনি। আলী হোসেন যে জাহাজে চাকরি করেন সেই কোম্পানির পক্ষ থেকে ফোন দিয়ে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বানারীপাড়া থানা পুলিশের পক্ষ থেকেও তার বাড়িতে কর্মকর্তারা যাওয়ার পাশাপাশি আলী হোসেনের মুক্তিতে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে। দরিদ্র পরিবারে আশার প্রদীপ হয়ে উঠেছিল আলী হোসেন। জলদস্যুদের হাতে অপহৃত হওয়ার পর থেকেই সে কেমন আছে বা কী অবস্থায় আছে তাই নিয়ে ভয় আর শঙ্কায় কাটছে প্রতিটা মুহূর্ত। তেমনি সরকারের কাছে দাবি জানান যেকোনো উপায় তার সন্তানসহ অপহৃত হওয়া জাহাজের ২৩ নাবিককে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনতে।