রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এবারের ভর্তি যুদ্ধে ‘সি’ ইউনিটে মেধা তালিকায় ৭৩তম স্থান পেয়েও অর্থাভাবে হতাশায় দিন কাটছে মেধাবী ছাত্রী মোছা. লাবনীর। নাটোর সদরের ছাতনী ভাবনী গ্রামের মো. বেলালের একমাত্র মেয়ে লাবনী জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশের পর এবার রাবিতে ‘সি’ ইউনিটে ভর্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে মেধা তালিকায় ৭৩তম স্থান অর্জন করেন। বেলালের হার্টে ব্লক থাকায় তিনি নিয়মিত কাজকর্ম করতে পারেন না। প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালাতে হয় তাকে। তার দাদি আমেনা খাতুন মাটির রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে যা আয় করেন তারই একটা অংশ তুলে দেন নাতনির লেখাপড়ার জন্য। স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও বেসরকারি সংস্থা রুম টু রিডও তাকে এ পর্যন্ত আসতে সহযোগিতা করেছে। এবার উচ্চশিক্ষা নিতে এখন রাবিতে ভর্তি হওয়া ও সেখানে থাকা খাওয়ার খরচ কিভাবে জোগান দেবেন সেটা ভেবেই কোনো কূলকিনারা পাচ্ছেন না লাবনীর মা বুলি বেগম ও দাদি আমেনা খাতুন। লাবনীর ফলাফলে তারা ভীষণ খুশি হলেও টাকার অভাবে সব আনন্দ হারিয়ে বিষাদে পরিণত হয়েছে। টাকার অভাবে লাবনী দেশের আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেননি। রাবিতেই শুধুমাত্র একটি ইউনিটে পরীক্ষায় অংশ নেন। লাবনীর স্কুল শিক্ষক স্থানীয় ছাতনী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ইন্তাজ আলী জানান, মেধাবী শিক্ষার্থী লাবনীর পারিবারিক অবস্থা অনেকটা পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের আসমানী কবিতার মতই। পরিবারের কেউ লেখা পড়া না জানলেও শুধুমাত্র নিজের প্রচেষ্টায় সে এত দূর এসেছে। সমাজের কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান লাবনীর মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ালে একদিন প্রতিষ্ঠিত হয়ে লাবনীও এ দেশ এবং সমাজের জন্য অনেক ভূমিকা রাখতে পারবে।