রোজার শুরুতেই মৌসুম শুরু হয় তরমুজের। মিষ্টি ও রসালো হওয়ায় ইফতারে চাহিদা বাড়ে এই ফলের। সুযোগ নিয়ে বিক্রেতারা হুহু করে বাড়ায় দাম। পিস হিসাবে বিক্রি না করে কেজি ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। সাত থেকে আট কেজির একটি তরমুজের দাম পড়ে ৭০০-৮০০ টাকা। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘তরমুজ বয়কটের’ ডাক দেয় সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি বাজারে তরমুজের সরবরাহ বেড়েছে অনেক। সেই সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান এবং বাংলাদেশ এগ্রি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশেনের ‘কৃষকের দামে তরমুজ বিক্রি’র উদ্যোগের কারণে কয়েক দিনের ব্যবধানে অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে তরমুজের দাম। তারপরও ক্রেতা নেই। ফলে বাজারে বিক্রেতাদের কপালে হাত। এদিকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকার বাজারে তরমুজের সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। ফলে দাম আরেক দফা কমেছে। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুব ভালোমানের তরমুজ প্রতিকেজি ৪৫-৫০ টাকা। তবে এই একই তরমুজ ভ্যানে ও ফুটপাতে ৪০ টাকা কেজিদরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। এই তরমুজ পাঁচ দিন আগেও ৮০-১০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়েছে। আর পিস হিসাবে কেউ চাইলে তার কাছে বিক্রি না করে অনেক বেশি দাম চাওয়া হয়েছে। এছাড়া খুচরা বাজারে ছোট আকারের বা ৪-৫ কেজির তরমুজ পিস হিসাবে ১৫০-১৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। যা আগে ৪০০-৫০০ টাকা ছিল। রামপুরা বাজারে ক্রেতা আরিফ বলেন, বয়কটের সিদ্ধান্তেই তরমুজের দাম কমেছে। আমি ৭ দিন ধরে তরমুজ কিনছি না। এটা আমার প্রতিবাদ। কারণ একটি তরমুজ ৮০০-৯০০ টাকা দিয়ে কিনব, এটা মগের মুলুক না। সবাই এভাবে জোটবদ্ধ হয়ে তরমুজ কেনা সাময়িক বন্ধ করতে পেরেছে বলেই দাম কমেছে। আর কয়েকদিন না কিনলে পিস ৩০-৪০ টাকায় নেমে আসবে। তিনি বলেন, প্রথম রোজায় পরিবারের বায়না রাখতে বাজারে গিয়ে তরমুজের দাম করেছিলাম। বিক্রেতা পণ্যটি কেজিদরে বিক্রি করতে চায়। পিস বিক্রি করবে না। কেজি এক দাম ১০০ টাকা। ৮ কেজির একটি তরমুজের দাম ৮০০ টাকা চাওয়া হয়। এত দাম হওয়ায় না নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে। এখন বিক্রেতারা বিক্রি করতে না পেরে সেই তরমুজ বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। না হয় পচে নষ্ট হলে ফেলে দিচ্ছে। বিক্রেতারা বলেন, তরমুজের সরবরাহ বেড়েছে। তবে ক্রেতা নেই। রোজার শুরুতে ওজন করে কিনতে হতো তাই ওজন করে বিক্রি করেছি। এখন পিস ও ওজন করে কিনি তাই কেজি বা পিস হিসেবে বিক্রি করছি। এছাড়া বাজারে তরমুজের সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু বিক্রি নেই। বিক্রেতারা আরও জানান, আর এক মাসের মতো তরমুজের মৌসুম আছে। রোজার কারণে এখন কিছুটা হলেও বেচাকেনা আছে। ঈদের পর সেটিও থাকবে না।