বাঁচানো গেল না সারাহর কিডনি নেওয়া শামীমাকেও

প্রকাশিতঃ এপ্রিল ৩, ২০২৪ | ১০:২৩ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

গত বছরের জানুয়ারিতে সারাহ ইসলামের অঙ্গদানের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হয় ব্রেন ডেথ মানুষের থেকে কিডনি নিয়ে অন্য রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া। যা দেশব্যাপী আলোচনার সৃষ্টি করে। তবে সফলতার যে কথা বলা হয়েছিল, সেটি অনেকাংশে ম্লান হয়েছে। প্রথমজনের পর দ্বিতীয় রোগী শামীমা আক্তারও (৩৪) মারা গেলেন। মঙ্গলবার রাত ৯টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে মারা যান শামীমা। ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, প্রথমজন লাং‌য়ের ইনফেকশনে (ফুসফুসের সংক্রমণ) মারা গেছেন। এবার দ্বিতীয়জনও চলে গেলেন। এটি আমাদের জন্য খুবই কষ্টের। তিনি বলেন, শেষ ছয় মাস আমাদের আওতার বাইরে ছিল শামীমা। সম্প্রতি শামীমার ভাই জানায়, কি‌ড‌নির ক্রি‌য়েটিনিন বেড়েছে, একেবারে শুকিয়ে গেছে শামীমা। পরে তিন সপ্তাহ আবারও বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয় তাকে। শুরুর দিকে কিছুটা উন্নতি হলেও কেন শুকিয়ে যাচ্ছিল সেটি ধরতে পারছিলেন না চিকিৎসকেরা। ক্রি‌য়েটিনিন পুনরায় বাড়ায় ওয়ার্ড থেকে কেবিনে আনা হয়। তারপরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় চার দিন আগে আইসিইউতে নেওয়া হয়। মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে এই সার্জন বলেন, তার র‌ক্তে সি ভাইরাস ও বিরল নিউমোনিয়া ধরা পড়েছিল। সে অনুযায়ী কিড‌নি ডায়ালাইসিসও শুরু করেছিলাম আমরা। কিন্তু আমাদের সেখানে সমস্যা হওয়ায় ওয়ার্ডে নিয়েও সি ভাইরাস ডায়ালাইসিস দিয়েছিলাম। এরপর আর উন্নতি হয়নি। বাইরের হাসপাতালেও একদিন নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন না হওয়ায় আবারও আমাদের আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানেই আজ রাত ৯টার দিকে মারা যায়। অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, হেপাটাইটিস সি পজিটিভ হলে ব্লাড কাজ করে না। এজন্য বিশেষ ধরে রক্ত লাগে, সেটিও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আর রেসপন্স করেনি। বাড়িতে থাকার সময়ে অবস্থা খারাপ হলেও সময়মতো আমাদের জানানো হয়নি। অনেকটা অবহেলা ছিল। খারাপ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তাহলে হয়তো এ অবস্থা দেখতে হতো না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শামীমার বাড়ি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায়। এদিকে দ্বিতীয় ক্যাডাভেরিকেও দুজনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ৭ বছর ধরে কিডনি সমস্যায় ভোগা এক ব্যক্তিকে এ বছরের ২৫ জানুয়ারি দেশের দ্বিতীয়বারের মতো ব্রেন ডেড রোগীর দেওয়া কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। রাজধানীর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটে হওয়া ওই প্রতিস্থাপনে ৪ ফেব্রুয়ারি মারা যান ৪৪ বছর বয়সি ওই রোগী। তবে বিসএমএমইউতে প্রতিস্থাপন হওয়া আরেক রোগী এখন পর্যন্ত সুস্থ।