৬০ লাখ নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে আ.লীগ: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিতঃ এপ্রিল ৫, ২০২৪ | ১১:১৮ পূর্বাহ্ন
অনলাইন নিউজ ডেক্স

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ১৯৭৫ সালের মতো আওয়ামী লীগ বাকশাল তৈরি করতে চায়। এবার তারা নয়া পদ্ধতিতে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে অসংবিধানিকভাবে ব্যবহার করে জনগণের গণতান্ত্রিক আকাংখা নস্যাৎ করে দিয়েছে দানব এই সরকার। বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও সাধারণ পাঠাগার চত্বরে আয়োজিত দলীয় ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ফখরুল। তিনি বলেন,আওয়ামী লীগ অনেক মানুষকে হত্যা করেছে, গুম করেছে। প্রায় ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়েছে। তারপরও কেউ বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়নি। কারণ বিএনপির এই সংগ্রাম ন্যায় ও সত্যের সংগ্রাম। বিএনপির আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আন্দোলন। আজ মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছর পরও গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে এ কী একটা অদ্ভুত ব্যাপার! জনগণের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এই অবৈধ সরকার যাদের কোন মেন্ডেড নেই, যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি তারা ক্ষমতায় থাকলে আরও ভয়াবহ পরিণতি হবে দেশ। অর্থনৈতিকভাবে দেশ ধ্বংস হয়েছে,লুটপাট করে অর্থ পাচার করে ব্যাংকগুলোকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে। এভাবে সব রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তাদের (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করছে। আমরা তা হতে দেবনা। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে লড়াই করতে হবে। ফখরুল আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বিশ্ব যদি আমাদের সমর্থন করে, জনতা আমাদের সাথেই রয়েছে। দেশকে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই বিএনপিকে নেতৃত্বের ভূমিকা রাখতে হবে। বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ অতীতে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করলেও আজ তাদের হাতে গণতন্ত্র ধ্বংস হচ্ছে। তারা পচাঁত্তরে বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্রকে ধুলিস্যাৎ করতে চেয়েছিল কিন্তু পারেনি। এখন ভিন্ন কৌশলে ছদ্মবেশে আবার সে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সাবেক পুলিশের আইজি বেনজির আহমেদ সম্পর্কে দলের মহসচিব বলেন,তিনি ১৭শ কোটি টাকা সম্পত্তি তৈরি করেছেন তার নিজের। এরপরও নামে বেনামে হাজার-হাজার কোটি টাকার মালিক। আওয়ামী লীগ এভাবে সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে দুর্নীতি গ্রস্থ করে তাদের ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করছে। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর যে স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিলেন। সেদিন সমস্ত বাংদেশের মানুষ একত্রিত হয়েছিল। ওই সময় আমাদের আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে, আয়োজন পন্ড করতে তাদের (আওয়ামী লীগ)আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দিয়েছিল। তারা আমাদের উপর গুলি বর্ষণ করে, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। আমরা বেশিক্ষণ সে মিটিংয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনি। এ সবের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ এদেশের গণতন্ত্রকে কবর রচনা করতে চেয়েছিল। বর্তমানে এ ভয়াবহ দানব সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রকে গিলে ফেলছে। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসার জন্য আমরা আন্দোলন করছি না, আমরা আন্দোলন করছি ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার ও বেঁচে থাকার অধিকার এবং কথা বলার অধিকারের জন্য। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলে সেই সংগ্রামকে আরও বেশি জোরদার করতে হবে। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের উপর সরকারি লোকেরা চেপে বসেছে যেন তারা খবর লিখতে না পারে। এদেশে এখন ‘কথা কইতে মানা-বলতে মানা’ সে অবস্থা সৃষ্টি করেছে দানব এ সরকার। আন্দোলন এবং সংগ্রামের মাধ্যমে এ অবৈধ সরকারকে আমরা পরাজিত করবোই দৃঢ়ভাবে আশাব্যক্ত করেন ফখরুল। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমীন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মামুন-উর-রশিদ প্রমুখ। এরপর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান র্ভাচুয়ালী নেতাকর্মীদের কুশল বিনিময় করেন। এর আগে ২৮ অক্টোবরের বিভিন্ন মামলায় কারামুক্ত দলীয় নেতাকর্মীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।