সামনেই ভারতের লোকসভা নির্বাচন। চলতি মাসের ১৯ এপ্রিল থেকে ১ জুন পর্যন্ত চলবে ভোটভুটির আয়োজন। নির্বাচন সামনে রেখে শুরু হয়েছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। জনগণের উদ্দেশে প্রতিশ্রুতির ফোয়ারা নিয়ে সামনে আসছে মনোনীত দলগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) প্রকাশ করল নিজেদের নির্বাচনি ইশতেহার। রোববার ‘মোদি কি গ্যারান্টি’ নামে সেই ইশতেহারপত্র সামনে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (৭৩)। নয়াদিল্লিতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রকাশিত এই ইশতেহারকে ‘নতুন ভারতের ছবি’ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি। দ্যা হিন্দু, এনডিটিভি। ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচন ঘিরে বিজেপি বেশ কিছু বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে নিজেদের ইশতেহারটি সাজিয়েছে। তৃতীয় মেয়াদে আবারও ক্ষমতায় এলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অবকাঠামো বৃদ্ধি এবং কল্যাণমূলক কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি ইশতেহারে ‘শক্তিশালী ভারত’ গড়ায়ও সংকল্পবদ্ধ মোদি। সেই সঙ্গে দেশের ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া, এক দেশ, এক ভোট ও এক আইনের পক্ষেও দলীয় অবস্থানের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। অর্থনীতি, বিজ্ঞান, সামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন ও বেকারত্ব দূরীকরণ ছাড়াও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দলের কঠোর অবস্থানের কথাও নির্বাচনি প্রতিশ্রুতিতে জানিয়েছে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনি ইশতেহারে বলেন, ৭০ বছর বয়স্কদের পাঁচ লাখ টাকা স্বাস্থ্যবিমা নিশ্চিত করা হবে। দেশের ১০ কোটি কৃষককে ১০০ দিনের কাজের আওতায় আনা হবে। ইশতেহারে দেশের কমপক্ষে তিন কোটি নারীকে ‘লাখপতি দিদি’ করার ঘোষণা করেন মোদি। বলেন, গৃহহীন মানুষের জন্য দেশে চার কোটি বাড়ি তৈরি করবে বিজেপি সরকার। এছাড়াও তথ্য-প্রযুক্তি, বিজ্ঞান ও সামাজিক উন্নয়নে নারী-পুরুষের পাশাপাশি ট্রান্সজেন্ডার তথা তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের বিশেষ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে বলে ইশতেহারে বলা হয়েছে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিজেপির লক্ষ্য জীবনযাপনের মানোন্নয়ন ও কর্মসংস্থান। এই ইশতেহারে এর উপরেই জোর দেওয়া হয়েছে। ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যসীমা থেকে বের করে আনা হয়েছে। মোদি বলেছেন, ইশতেহারটি অবকাঠামো, বিমান চলাচল, রেলপথ, বৈদ্যুতিক যানবাহন, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, সেমিকন্ডাক্টর এবং ফার্মাসিউটিক্যালস ইত্যাদি খাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর মনোযোগ দিয়েছে। তবে গত পাঁচ বছরে জরিপের ফল অনুসারে ভারতে বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতি ও গ্রামীণ জনপদে দুর্দশার ইঙ্গিত উঠে এসেছে। যা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশটিতে উদ্বেগের বিষয় হিসাবে হাজির হচ্ছে। ক্ষমতায় এলে এগুলো মোকাবিলা করাই হবে মোদির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।