রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার বান্ধের থান্দার পাড়ার গোরস্থান থেকে উদ্ধারকৃত বস্তাবন্দী মরদেহের রহস্য উন্মোচন করেছে পুঠিয়া থানা পুলিশ। হত্যার শিকার বেদেনা বেওয়া (৬০) এর ছেলের বৌয়ের সাথে পারিবারিক কলহের কারণে তাকে হত্যার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সাইদুর রহমান। এ হত্যাকাণ্ডে ঘটনায় নিহত বেদেনা বেওয়ার ছেলের বৌ কনিকা (২৯) ও নাতনি কথা খাতুন (১৪) এবং প্রতিবেশী জুয়েলের ছেলে বশির (১৬) কে আটক করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে পুঠিয়া থানার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুর রহমান জানান, গত বুধবার (৯ এপ্রিল) পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের থান্দারপাড়া গ্রামের একটি গোরস্থান থেকে বস্তাবন্দী এক বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার গলায় কাটা চিহ্ন এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম ছিল। এছাড়াও মুখে স্কচটেপ জড়ানো ছিল। পরে নিখোঁজ বেদেনার পরিবার তার পরিচয় সনাক্ত করে। বেদেনার মরদেহ উদ্ধারের পর তার ছেলে রিপন আলী বাদি হয়ে পুঠিয়া থানার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুঠিয়া থানা পুলিশ ও পিবিআই রাজশাহী জেলার একটি টিম মামলা গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত নিহত বেদেনার ছেলের বৌ কনিকা ও নাতনি কথা খাতুন এবং প্রতিবেশী বশির কে গ্রেফতার করে। তদন্তে জানাযায়, বেদেনা বেওয়ার স্বামী মারা যায়ও পর তিনি তার স্বামীর ভিটায় তার ছেলে দ্বিতীয় বিয়ে করায় ছেলের প্রথম স্ত্রীর ছেলে হিমু ও মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ে হওয়া মেয়ে প্রথম স্বামীর মেয়ে কথা খাতুনকে নিয়ে বসবাস করতেন। বেদেনা বেওয়া বানেশ্বর বাজারের ডাক্তার মিজানের বাড়িতে কাজ করে দুপুরের খাবার নিয়ে বাড়ি ফিরতেন। তার ছেলের দ্বিতীয় স্ত্রী কনিকার সাথে সংসারী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় বেদেনা বেওয়া নিজের মত করে চলতেন। গত শুক্রবার বেদেনার ছেলের বৌ কনিকা সন্ধ্যায় ইফতারের সময় সরবতে সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে কথা খাতুনের মাধ্যমে বেদেনাকে খাইয়ে দেয়। সরবত খাওয়ার পর বেদেনা বেওয়া ঘুমিয়ে পরলে কনিকা ও সহযোগীর বশিরের মাধ্যমে বেদেনা বেওয়া দুই হাত খাটের সাথে ওড়না দিয়ে বেধে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। পরে বশিরের ও কণিকার মাধ্যমে বেদেনার মরদেহ বস্তাবন্দী করে বাড়ির পাশের কবরস্থানে ফেলে দেয়। শুক্রবার দুপুরের পর মরদেহের দুর্গন্ধ পেয়ে স্থানীয়রা কবর স্থানে গিয়ে বস্তাবন্দী মরদেহ দেখতে পান। সেসময় পুঠিয়া থানা পুলিশসহ (সিআইডি) এসে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সাইদুর রহমান জানান, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। আটকৃতরা আদালতে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। মামলার সকল আসামী গ্রেফতার হয়েছে বলে জানান।