বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অনেকে বলে, এটা বিএনপির সংগ্রাম।এটা বিএনপির সংগ্রাম নয়, এটা এদেশের মানুষের অস্তিত্বের সংগ্রাম।এই অধিকার ফিরে আনার জন্য আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। আমাদেরকে আরও ত্যাগ স্বীকার করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শ্রমিক দলের উদ্যোগে র্যালিপূর্ব শ্রমিক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে রাজধানীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করেছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। এই শোভাযাত্রাকে ঘিরে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে ওঠে নয়াপল্টন এলাকা। রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুনের পাশাপাশি নেতাকর্মীদের হাতে হাতে ছিল লাল-সবুজ পতাকা এবং মাথায় ছিল লাল-সবুজ ক্যাপ। বিকাল পৌনে ৫টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এ র্যালি শুরু হয়। র্যালিটি নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে পার্টি অফিস সামনে দিয়ে আরামবাগ হয়ে আবারো কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এর আগে বিকাল ৩টা ৩৫ মিনিটে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের মধ্যদিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে র্যালিপূর্ব সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশের জন্য ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই মে দিবসে দেশের সব মানুষের কাছে আমরা আহ্বান জানাতে চাই- সব রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান, সংগঠন এবং শ্রমিকদের কাছে- আসুন, এখন আর আমার চুপ করে বসে থাকলে চলবে না। আমাদেরকে (সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি) জেগে উঠতে হবে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আপনার অধিকারকে ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন ও সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আন্দোলন ও সংগ্রামের মধ্যদিয়েই জনগণের ভোটের অধিকার ফিরে আনব। এই হোক আজকের মে দিবসে আমাদের অঙ্গীকার।’ সমগ্র বাংলাদেশে সরকার লুটপাটের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি। ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি শুধু নয়, এদেশের সব গণতন্ত্রকামী মানুষ আজকে এখনো জেগে উঠছে।জেগে উঠছে তারা।আবার জেগে উঠছে।আমরা অতিতেও পরাজিত হই নাই, আমরা পরাজিত হব না।আমাদের যে লক্ষ্য, বাংলাদেশে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব এবং ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনব।’ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘অনেক ত্যাগ আমরা স্বীকার করেছি, আমাদের অনেক ভাই গুম ও খুন হয়েছে। মিথ্যা মামলায় জর্জরিত। এখনো দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন।এই রকম একটা অবস্থায় ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা। এদেশের প্রশাসন, গণমাধ্যমসহ সবকিছুকে কুক্ষিগত করে একটা একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করবার জোর পাঁয়তারা চলছে।কৌশলটা ভিন্ন। সংসদে বিল পাশ করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চায় না। তারা গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে রেখে দিয়ে, গণতন্ত্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়ে, জনগণকে দমন করে তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেছে।’ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ১২ দফা দাবি সংবলিত ঘোষণাপত্র পাঠ করেন শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন। সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানসহ দলের নেতারা বক্তব্য দেন।