পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির যে অভিযোগ উঠেছে তা তিনি অস্বীকার করেছেন। কলকাতার রাজভবনে কর্মরত এক নারী বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন। এরপর থেকে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে ওই নারী জানিয়েছেন, প্রথমবার ২৪ এপ্রিল তার শ্লীলতাহানি করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে তিনি পুলিশে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নেন। অন্যদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে পুরো ঘটনাকেই ‘পরিকল্পিত’, ‘ভিত্তিহীন’ এবং তাকে ‘কালিমালিপ্ত করে নির্বাচনি ফায়দা তোলার চেষ্টা’ বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। শুক্রবার সকালে একটি অডিওবার্তায় তিনি বলেন, আমি জানি আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক বল কাজ করছে। আমার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ মিথ্যে। এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে রাজভবনের পক্ষ থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সত্যের জয় হবেই। পরিকল্পনা মাফিক তৈরি ন্যারেটিভের বিষয়ে আমি মাথা ঘামাতে রাজি নই। আমার সম্মানহানি করে কেউ যদি নির্বাচনি ফায়দা পেতে চায় ঈশ্বর তাদের কল্যাণ করুন।বাংলার দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমার লড়াই কোনোভাবে থামতে পারবে না। রাজ্যপাল তার বিবৃতিতে ‘নির্বাচনি ফায়দা’ তোলার যে অভিযোগ জানিয়েছেন, তার নিশানায় রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস। এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের ডি সি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখার্জী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, রাজভবনের আউটপোস্টে একটা অভিযোগ আসে। এক নারী, যিনি রাজভবনের কর্মী, তিনি শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছেন। অভিযোগ রাজভবনের আউটপোস্টে জমা পড়ে। সেটাকে হেয়ার স্ট্রিট থানায় ফরোয়ার্ড করা হয়। তিনি জানান, অভিযোগটা রয়েছে মাননীয় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারিণী থানায় এসে সবিস্তারে অভিযোগ জানিয়েছেন। ২০১৯ সাল থেকে রাজভবনে অস্থায়ী কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন এই নারী। পুলিশের কাছে দায়ের করা লিখিত অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, গত ১৯ এপ্রিল রাজ্যপাল তাকে স্থায়ী চাকরির বিষয়ে আলোচনার জন্য দেখা করতে বলেন। সেই কারণেই তিনি ২৪ এপ্রিল রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যান। তার অভিযোগ, সেদিন প্রথমবার তার শ্লীলতাহানি করা হয়। বৃহস্পতিবার তাকে আরও একবার ডেকে পাঠান সি ভি আনন্দ বোস। একা যাওয়ার বদলে তার সুপারভাইজারকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যান।অভিযোগকারীর দাবি, কিছুক্ষণ পরে সুপারভাইজারকে কনফারেন্স রুম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন রাজ্যপাল। এরপর তার শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই নারী। তাকে পদোন্নতির প্রলোভন দেখানো হয় বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি